একটা চোখ গুরুতরভাবে রাসায়নিকে পুড়ে গেছে এমন চারজন রোগীর স্টেম সেল থেরাপির সাহায্যে দৃষ্টির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়ালে চারজন রোগীর দৃষ্টিশক্তির প্রাথমিক উন্নতি দেখা গেছে। মার্কিন গবেষকদের বক্তব্য অনুসারে, আরও চিকিত্সা ছাড়াই, দুজন রোগী এক বছরের ফলো-আপের পরে তাদের দৃষ্টি শক্তির উন্নতির কথা জানিয়েছেন। অন্য দুই রোগীর ক্ষেত্রে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছিল, যা তাদের আঘাতের তীব্রতার জন্য আগে করা সম্ভব হত না।
এই নতুন কৌশলে রোগীর সুস্থ চোখ থেকে স্টেম সেলের ছোটো অংশ নিয়ে তা থেকে একটা টিস্যু গ্রাফ্ট তৈরি করা হয়। একে কাল্টিভেটেড অটোলোগাস লিম্বাল এপিথেলিয়াল সেল (CALEC) প্রতিস্থাপন বলা হয়, আর শরীর এটা প্রত্যাখ্যান করে না কারণ কোশগুলো রোগীর নিজের শরীর থেকেই নেওয়া হয়। CALEC প্রতিস্থাপনের জন্য স্বাস্থ্যকর চোখের কর্নিয়ার বাইরের সীমানা, লিম্বাস থেকে কোশগুলো সংগ্রহ করা হয়। এই লিম্বাল স্টেম সেলগুলো কর্নিয়া সংরক্ষণে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে, এটা চোখের প্রতিরক্ষামূলক, স্বচ্ছ বাইরের স্তর যার মধ্যে দিয়ে প্রথম আলো যায়। দৃষ্টির স্বচ্ছতার জন্য এর মসৃণতা অপরিহার্য।
রাসায়নিকে পোড়া চোখের প্রায়শই লিম্বাল অংশে ক্ষতি হয়, যার ফলে নতুন কোশ স্বাভাবিকভাবে পুনরুত্পাদিত হয় না। চোখের ক্ষতির চিকিৎসায় সাধারণত অন্য দাতার চোখ থেকে স্বাস্থ্যকর কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়। যেহেতু নতুন কর্নিয়ার টিস্যুকে সমর্থন করার জন্য কার্যকরী লিম্বল স্টেম সেল এবং স্বাস্থ্যকর চোখের পৃষ্ঠদেশ প্রয়োজন, তাই খুব ক্ষতিগ্রস্থ চোখের ক্ষেত্রে প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। বিকল্প ভাবে দাতার লিম্বল টিস্যু গ্রাফ্ট, ব্যবহার করা যায়, কিন্তু তার থেকে সংক্রমণ ঘটাতে পারে অথবা রোগীর সুস্থ চোখের কোশের বেশ বড়ো অংশ সরাসরি আহত চোখে প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। কিন্তু বেশি টিস্যু নিলে স্বাস্থ্যকর চোখ খারাপ হতে পারে। কিন্তু এই নতুন পদ্ধতিতে স্বাস্থ্যকর চোখের স্টেম সেল টিস্যু ন্যূনতম পরিমাণ ব্যবহার করে, কোশের একটি বৃহত্তর স্তরে বৃদ্ধি করা হয়, এটা আহত চোখের পৃষ্ঠে একবার প্রতিস্থাপন করলে সুস্থ কোশের পুর্নউৎপাদন হয়।
গবেষকরা বর্তমানে CALEC রোগীদের ১৮ মাস ধরে অনুসরণ করে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের পরবর্তী ধাপ শেষ করেছেন, যাতে, পদ্ধতির সামগ্রিক কার্যকারিতা আরও ভালভাবে নির্ধারণ করা যায়। এই গবেষণা সায়েন্স অ্যাডভান্সে প্রকাশিত হয়েছে।