কারেন্ট বায়োলজিতে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যায় যে হেলিকোনিয়াস প্রজাপতিরা দীর্ঘ পরিসরের পথ, যা কয়েকশো বর্গমিটারও হতে পারে তার স্থানিক তথ্য সম্বন্ধে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থাকে। তাই তারা যে ধরনের গাছ বা ফুল থেকে মধু বা পরাগ খেতে অভ্যস্ত, নির্দিষ্ট পরিসরে সেই গাছের কাছে তারা ঘুরে ঘুরে চরতে থাকে। এটা ট্র্যাপলাইনিং নামে পরিচিত।
পোকামাকড়ের মধ্যে স্থানিক জ্ঞান একটা মোটামুটি পরিচিত বিষয়, তবে তা নিয়ে বেশিরভাগ গবেষণা সামাজিক প্রাণী পিঁপড়ে এবং মৌমাছির প্রজাতির ওপর করা হয়েছে। কারেন্ট বায়োলজিতে প্রকাশিত এই গবেষণা প্রজাপতি বা পতঙ্গের স্থানিক ধারণার ওপর প্রথম প্রত্যক্ষ প্রমাণ দিচ্ছে। গবেষকরা বলছেন পতঙ্গের জটিল বিষয় শেখার দক্ষতা, যেমন স্থানিক তথ্যের ব্যবহার, আগে যতটা ভাবা হত পোকামাকড় তার তুলনায় বেশি ব্যবহার করে।
ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেসের ডক্টর স্টিফেন মন্টগোমারি, গবেষণার একজন লেখক বলেছেন, হেলিকোনিয়াস প্রজাপতিদের ফুলের পরাগ খাওয়া থেকে তাদের মধ্যে ফুলে ফুলে চরার আচরণ তৈরি হয়ে থাকে। তারা পরীক্ষা করে দেখেছেন, বন্য হেলিকোনিয়াস তার পছন্দসই পরাগ উৎসের অবস্থান বিভিন্ন দূরত্বে, নানা ধরনের ফুলের মধ্যে খুঁজে বের করতে, ট্র্যাপলাইন স্থাপন করে। এই গবেষণায় গবেষকরা এটাও খুঁজে বের করার প্রয়াস করেছেন, হেলিকোনিয়াস প্রজাপতির এই আচরণের পিছনে কী কারণ থাকে। তারা মনে করছেন চাক্ষুষ সংকেত, যেমন প্যানোরামিক ভিউ বা বড়ো চওড়াভাবে দেখা হেলিকোনিয়াসের এই আচরণের পিছনে একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ। তবে তারা সূর্য বা ভূ-চৌম্বকীয় কম্পাসের মতো অন্যান্য সংকেতের উপরও নির্ভর করে থাকে। গবেষকরা বিস্মিত হয়েছেন, প্রজাপতির মতো সরল ছোটো প্রাণী তাদের আশপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে এমন জটিল আচরণ করে। এই প্রজাতি তাদের পরিবেশ থেকে বিভিন্ন তথ্য আহরণ ও প্রক্রিয়াজাত করতে পারে এবং এই জটিল কাজ সম্পাদন করতে তাদের কয়েক মিলিমিটার চওড়া মস্তিষ্ক যথেষ্ট।