দেহের মেদ গলায়, বিপাকে সাহায্যে করে, থার্মো অ্যাক্টিভেটর- স্পোর্টস সাপ্লিমেন্টগুলো বিজ্ঞাপনে এমনটাই দাবি করে। স্পোর্টস সাপ্লিমেন্ট অর্থাৎ খেলোয়াড়রা শরীরকে ফিট রাখার জন্য যে ওষুধ খায়। কিন্তু কেউ কী আনুমান করতে পারে এই বড়ি বা পাউডারে আসলে কী উপাদান রয়েছে? জামা নেটওয়ার্ক ওপেনে রিপোর্টে বিজ্ঞানীরা প্রকাশ করেছেন যে প্রায় ৬০টি পরীক্ষিত স্পোর্টস সাপ্লিমেন্টের মধ্যে মাত্র ১১% -এ প্রকৃতপক্ষে লেবেলে তালিকাভুক্ত মূল উপাদান সঠিক পরিমাণে রয়েছে৷ ৪০% সাপ্লিমেন্টে উপাদানগুলোর সনাক্তযোগ্য পরিমাণও ছিল না। সোমারভিলের ম্যাসে কেমব্রিজ হেলথ অ্যালায়েন্সের একজন ডাক্তার, পিটার কোহেনের মতে এটা অবিশ্বাস্য যে ৪০% পণ্যের মধ্যে, প্রস্তুতকারক লেবেলে দেওয়া কোন উপাদান রাখতে প্রয়োজনই বোধ করেনি।
কোহেন এবং তার সহকর্মীরা রাসায়নিকভাবে ৫৭ টি স্পোর্টস সাপ্লিমেন্টের লেবেল বিশ্লেষণ করে দেখেছেন যে সেখানে R. vomitoria, methylliberine, halostachine, octopamine বা turkesterone – উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ যৌগের নাম দেওয়া আছে যা সম্ভাব্যভাবে উদ্দীপক বা পেশী-নির্মাতা হিসাবে কাজ করতে পারে। শুধুমাত্র ৩৪ টি ক্ষেত্রে দাবি করা উপাদান রয়েছে, মাত্র ৬টির ক্ষেত্রে উপাদানের পরিমাণ সঠিক ছিল, ২৮টি ক্ষেত্রে ভুল পরিমাণে উপাদান ছিল এবং তা লেবেলে নির্দেশিত পরিমাণের ০.০২% থেকে ৩৩৪% পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়েছে। হিউস্টনের বেলর কলেজ অফ মেডিসিনের ডায়েটিশিয়ান এবং এপিডেমিওলজিস্ট লুইস রাস্টভেল্ডের মতে এটি খুবই উদ্বেগজনক কারণ কিছু খেলোয়াড় এই উপাদানগুলোর প্রতি সংবেদনশীল হতে পারে। কোহেন ও তার গবেষকের দল আরও দেখেছে যে পরীক্ষিত সাতটি পণ্যে অন্তত একটি যৌগ রয়েছে যা মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন নিষিদ্ধ করেছে। আগেও বিজ্ঞানীরা বহু সাপ্লিমেন্ট সনাক্ত করেছে যাতে ক্ষতিকারক ওষুধ ছিল(SN: 10/12/18)। পুষ্টি বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিসিয়া ডিউস্টার বলেছেন যে শুধুমাত্র একটি সাপ্লিমেন্ট বাজারে আসার মানে এই নয় যে এটি নিরাপদ, কার্যকর বা যা বিজ্ঞাপন দেয় এতে তা রয়েছে। এক্ষেত্রে এনএসএফ, বিএসসিজি এবং ইউএসপির মতো তৃতীয় পক্ষের সংস্থাগুলো সহায়ক হতে পারে কারণ তারা সাপ্লিমেন্টের উপাদান বিশ্লেষণ করে এবং অনুমোদন দেয়। তাই যদি স্পোর্টস সাপ্লিমেন্টের বিজ্ঞাপনে অতিরঞ্জন দেখেন তবে সেটি কেনার আগে একটু ভাবুন।