গাড়ির টায়ারে নতুন একটা উপাদান ব্যবহারে রাস্তায় রবারের টায়ার থেকে হওয়া দূষণ রোধ করা সম্ভব। ২৩শে জুন সায়েন্স পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, টায়ারের দুর্বল স্থানে ঠিকমতো পলিমার চেন যুক্ত করতে পারলে, তা সহজে ছিঁড়বে না। এতে সময়ের সাথে সাথে টায়ার ক্ষয় হয়ে দূষণ ছড়ানো কমবে। যখন রাস্তার সাথে ঘষা লেগে লেগে টায়ার ক্ষয় হতে থাকে, তখন তার থেকে রবার ও প্লাস্টিকের কণা বেরিয়ে বাতাসে, জলে মিশে দূষণ ঘটায়। প্রতি বছর, টায়ার থেকে আনুমানিক ৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন মাইক্রোপ্লাস্টিক পরিবেশে যুক্ত হয়। কম ভাঙে এমন শক্তিশালী পলিমার যুক্ত করা গেলে বার্ষিক মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার পরিমাণ সীমিত হতে পারে।
এই ধরনের শক্ত উপকরণ তৈরি করার জন্য, ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নবিদ স্টিফেন ক্রেগ এবং সহকর্মীরা পলিমারগুলিতে ক্রস-লিঙ্কার অণু যুক্ত করেছিলেন। এই ক্রস-লিঙ্কারগুলো এমনভাবে পলিমার চেনগুলোকে সংযুক্ত করেছিল যাতে সেগুলো সহজেই আলাদা করা যায়। এরকম বিশেষভাবেই তাদের ডিজাইন করা হয়েছিল। এমআইটির ক্রেগের সহযোগী একজন রসায়নবিদ শু ওয়াং বলেছেন, মাইক্রোস্কোপিক স্কেলে দেখলে বোঝা যায়, পলিমারগুলো স্প্যাগেটি স্ট্র্যান্ডের মতো জড়িয়ে থাকে আর ক্রস-লিঙ্কারগুলো তাদের সবগুলিকে একত্রিত করে তাদের আকৃতি ধরে রাখতে সহায়তা করে।
গবেষকের দল যখন পলিমারের স্প্যাগেটির মতো স্ট্র্যান্ড প্রসারিত করেন, প্রত্যাশিতভাবে পৃথক ক্রস-লিঙ্কারগুলি সহজেই ভেঙে যায়। কিন্তু একসাথে থাকা অনেকটা উপাদান ভাঙতে বেশ অনেকটা শক্তির প্রয়োজন হয়।
ক্রেগ বলেছেন,এই দৃঢ়তা বৃদ্ধির রহস্য পলিমার চেন ভাঙার পথের মধ্যেই নিহিত আছে। মজবুত পলিমার স্ট্র্যান্ডের পরিবর্তে সহজে ভাঙতে পারে এমন অঞ্চলের ক্রস-লিঙ্কারের মধ্যে ভাঙা শুরু হয়। প্রত্যেক ভাঙা এমন স্থানে ঘটতে থাকে, যেখানে সংযোগস্থলে ন্যূনতম প্রতিরোধ থাকে। কিন্তু দীর্ঘ মজবুত পলিমার স্ট্র্যান্ডগুলো ভাঙার জন্য অনেকগুলো ক্রস-লিঙ্কার ভাঙতে হয়, ফলে সেই স্থানে ভাঙআর জন্য সামগ্রিকভাবে আরও শক্তি প্রয়োজন।
ক্রেগ আশা প্রকাশ করেছেন যে এই কাজের ফলাফলে গাড়ির টায়ার এবং প্লাস্টিকের জীবনকাল দীর্ঘায়িত হবে, এবং সম্ভাব্য বার্ষিক মাইক্রোপ্লাস্টিক যে দূষণ হয় তার পরিমাণ কমে তা সীমিত হবে।