পঞ্চাশ কোটি বছর আগে ক্যামব্রিয়ান বিস্ফোরণের সময় মহাসাগরে অন্যান্য অজানা অচেনা প্রাণীদের সঙ্গে দেখা যেত অ্যানোমলোকারিস, গ্রীক ভাষায় যার অর্থ হল “কানাডার অদ্ভুত শ্রিম্প বা চিংড়ি” যা সেই প্রাচীন সমুদ্রের একটি প্রধান শিকারী ছিল। বাড়ির বিড়ালের মতো দৈর্ঘ্যের এই প্রাণী ক্যামব্রিয়ান যুগের বৃহত্তম প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম ছিল। কিছু গবেষকের মতে এরা ট্রিলোবাইটের শিকার করত। ক্রাস্টেসিয়ান, মাকড়সা এবং পোকামাকড় সহ বর্তমানে বসবাসকারী অনেক অমেরুদণ্ডী প্রাণীর মতো, ট্রাইলোবাইট ছিল আর্থ্রোপড।
গবেষকদের মতে জীবাশ্ম থেকে জানা যায় যে এ.ক্যানাডেনসিসের মুখের কাছে দুটি কাঁটাযুক্ত উপাঙ্গ রয়েছে যার সাহায্যে এরা সমুদ্রতল থেকে শক্ত শক্ত সামুদ্রিক প্রাণীদের (ট্রাইলোবাইট) ধরে পিষে খায়ে ফেলত। কিন্তু ১২ই জুলাই প্রসিডিংস-এ এক নতুন বিশ্লেষণ থেকে জানা গেছে যে এই শিকারী শ্রিম্প, এ. ক্যানাডেনসিস, জলে নরম প্রাণীদেরই শিকার করত।
নিউ ইয়র্ক সিটির আমেরিকান মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রির প্যালিওবায়োলজিস্ট রাসেল বিকনেলের মতে ট্রিলোবাইটের বাইরের আবরণ বা এক্সোস্কেলটন খুব শক্ত এবং পুরু এবং এখনও এটা প্রমাণিত নয় যে এ. ক্যানাডেনসিস সেই আবরণ ভেঙে দিতে পারে। তাই বিকনেল এবং সহকর্মীরা কিছু আধুনিক সন্ধিপদী প্রাণীদের নরম উপাঙ্গের সঙ্গে এর তুলনা করেছেন এবং কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে এদের উপাঙ্গের দৃঢ়তা, গতির পরিসীমা এবং সাঁতারের অবস্থান পরীক্ষা করে দেখেন।
তাই গবেষকরা অনুমান করেছেন যে এদের কাঁটা কাঁটা উপাঙ্গ শিকার ধরতে সাহায্য করে তবে পিছনের অংশগুলো সম্ভবত খুব সূক্ষ্ম ছিল যা শক্ত আবরণযুক্ত শিকারকে আক্রমণ করতে পারে না। ক্যানাডেনসিস দক্ষতার সাথে তার উপাঙ্গ প্রসারিত করে জলে চলে বেড়াত। এরা জলের মধ্য দিয়ে সাঁতার কাটা নরম প্রাণীদের তাড়া করত এবং তাদের কাঁটা কাঁটা উপাঙ্গের সাহায্যে আটকে রাখত।