জলবায়ু পরিবর্তনের ঠ্যালায় যখন বিশ্ববাসী জেরবার, তখন সেই সমস্যার এক অভিনব প্রভাবের কথা শোনাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ওনাদের মতে, ২১০০ সালের মধ্যে ৫% বৃদ্ধি পাবে রামধনুর সংখ্যা।
গবেষণার কাজে বিশেষজ্ঞরা ব্যবহার করেছেন আপলোড হওয়া রামধনুর ছবি, বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর তথ্য আর একটা কম্পিউটার মডেল। দেখা গেছে পৃথিবীর স্থলভাগের মধ্যে ২১ থেকে ৩৪ শতাংশ জায়গায় সংখ্যায় কম হবে ‘রেনবো ডেজ’। উল্টোদিকে ৬৬ থেকে ৭৯ শতাংশ স্থানে রামধনু দেখা মিলবে আগের চেয়ে বেশি সংখ্যায়। কিন্তু, শর্ত একটাই – পৃথিবীর উষ্ণতা বর্তমান হারে টানা বৃদ্ধি পেতে হবে!
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যান্ড সিস্টেম সায়েন্টিস্ট কিম্বার্লে কার্লসন বলছেন, হাওয়াইতে থাকার সময় রোজকার জীবনের একটা অংশ হয়ে উঠেছিল রামধনুর দর্শন পাওয়া। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের গুঁতোয় সেই সুযোগ কতটা মিলবে এরপর, সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েই গেছে।
ফ্লিকারের ফটো-শেয়ারিং ওয়েবসাইট থেকে দশহাজারের বেশি আলোকচিত্র কাজে লাগিয়েছেন গবেষকরা। বেশিরভাগ ছবিতেই রামধনু, আর অবস্থানের তথ্যও ছিল। সেগুলো বৃষ্টিপাত, মেঘ আর সূর্যের কৌণিক অবস্থান ইত্যাদি নানাবিধ ম্যাপের সাথে মিলিয়ে বিজ্ঞানীরা অভিনব এই পূর্বাভাষ তৈরি করতে সক্ষম হলেন।
তারপর কম্পিউটার মডেলের সাহায্যে আগামী বছরগুলোতে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে জলবায়ু পরিবর্তনের ঠিক কী কী প্রভাব পড়তে পারে সেটা খতিয়ে দেখা হয়। গবেষকরা বলছেন, অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় যেমন তিব্বতের মালভূমিতে, কম জনঘনত্বের অঞ্চলে বেশি দেখা যাবে রামধনু।
কার্লসন জানিয়েছেন, পৃথিবীর বুকে মানুষের অভিজ্ঞতার সবকটা ক্ষেত্রেই ব্যাপক বিকৃতি তৈরি করবে জলবায়ু পরিবর্তন। শব্দ আর আলোর মতো বিষয়ও আর মোটেই আগের মতো থাকবে না। বিজ্ঞানীদের উচিৎ এসব ক্ষেত্রেও মনোযোগ দেওয়া।
গ্লোবাল এনভায়রনমেন্টাল চেঞ্জ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটা।