উপায় বদলেও সুরাহা নেই। প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে আমরা যা পেলাম, তাও একশোভাগ নিরীহ নয়। নতুন গবেষণা বলছে, পৃথিবী জুড়ে সবচেয়ে প্রচলিত একটা বায়োপ্লাস্টিক মাছেদের জন্য ক্ষতিকারক।
ভুট্টা কিংবা আখের মতো স্টার্চ থেকে তৈরি করা হয় পলি-এল-ল্যাক্টাইড বা সংক্ষেপে পিএলএ। খাদ্যদ্রব্যকে মোড়কজাত করতে, বস্ত্র উৎপাদনে, খাবার টেবিলের ছুরি-কাঁটা চামচ তৈরিতে এই বায়োপ্লাস্টিক সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ব্যবহৃত হয়।
‘সায়েন্স অফ দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট’ নামের পত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে এই বায়োপ্লাস্টিকের প্রভাবে স্বাদুজলের প্রধান একটা মাছের আচরণ পাল্টে যাচ্ছে। মাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম – পার্চা ফ্লুভিয়াটিলিস। সাধারণ নাম – ইউরোপিয়ান পার্চ মাছ। এই মাছের বেড়ে ওঠার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া পিএলএ-র প্রভাবে ব্যাহত হয়। পরীক্ষায় দেখা গেছে, জলের মধ্যে ছয় মাস এই সূক্ষ্ম পিএলএ কণার সংস্পর্শে থাকলে পার্চ মাছের ছানার ভোল বদলে যায়। অন্য মাছের সাথে ব্যবহারও পাল্টে যায়। নড়াচড়া কমে যায়। বিপদে সাড়া দেওয়ার বৈশিষ্ট্যেও পরিবর্তন আসে।
সুইডেনের গোটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অ্যাজোরা কার্ডগার পরীক্ষার সাথে যুক্ত ছিলেন। পার্চ মাছের ৬০টা ছানাকে কয়েকটা দলে ভাগ করে স্বাভাবিক পরিষ্কার জলে আর পিএলএ মেশান জলে রেখে পর্যবেক্ষণ করা হয়। তাতেই এই মর্মান্তিক সত্যিটা উঠে এসেছে। অ্যাজোরা বলছেন, যেহেতু দেখা যাচ্ছে পিএলএ মাছের ক্ষতি করছে তাই সাধারণ প্লাস্টিকের পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে এটার বিক্রি যেন আর না হয়।