যুদ্ধ যে কোনও সাময়িক বিপদের বিষয় নয়, সেটা প্রমাণ হয়েছে বারংবার। যুদ্ধের প্রভাব পরবর্তী দশক কিংবা শতকের চিন্তাভাবনা, গবেষণা, সমাজজীবন সবটাই বদলে দিতে পারে। স্বয়ংক্রিয় যুদ্ধাস্ত্রের উন্নতিতে নাকি সচেষ্ট হয়েছে মার্কিন মুলুকের সামরিক দপ্তর। ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিয়েই এই নতুন উদ্যোগ।
চলতি বছরের ২৩শে জানুয়ারি অ্যামেরিকার প্রতিরক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে ঘোষণাটা এসেছিল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা চালিত যুদ্ধাস্ত্রের গবেষণায় বিপুল অনুদানের আশ্বাসও এসেছে। এই পরিকল্পনার মূল শেকড়টা যদিও গত বছরের ১৩ই অক্টোবর ন্যাটোর বৈঠকেই ছিল। যেখানে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে শত্রু দেশকে পর্যুদস্ত করার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ‘কিলার রোবটস’ অর্থাৎ ঘাতক রোবটের ধারনাটাও তাই বাস্তবায়িত হতে চলেছে।
খুনে রোবট নিয়ে গবেষণায় অ্যামেরিকার সদর্থক পদক্ষেপ আর ন্যাটোর বৈঠক। দুটো ঘটনাই একটা নির্দিষ্ট দিককে প্রতিফলিত করছে। যুদ্ধকৌশলের ভবিষ্যৎ ন্যস্ত হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের উপরই।
‘আর্টিকেল ৩৬’ নামক এক মানবাধিকার সংস্থা যুদ্ধাস্ত্রের দরুন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানোর কাজে ব্রতী রয়েছে। সংস্থার কর্ণধার রিচার্ড মোয়েস বলছেন, সেনাধ্যক্ষরা ইউক্রেনের যুদ্ধে ‘লয়টারিং মিউনিশান’-এর গুরুত্ব ভালো মতোই টের পেয়েছেন। ‘লয়টারিং মিউনিশান’ এক প্রকারের বায়ুগামী অস্ত্র, যা ড্রোন আর বোমার মেলবন্ধন। লক্ষ্যবস্তু যতক্ষণ না নির্দিষ্ট অবস্থানে আসছে ততক্ষণ এই অস্ত্র আঘাত করার জন্য অপেক্ষা করতে পারে। এখন যেসব মিসাইল ব্যবহৃত হয় তা কিন্তু আধা-স্বয়ংক্রিয়। অর্থাৎ, মানুষের নিয়ন্ত্রন এক্ষেত্রে বিশেষ জরুরি।
যদিও, মার্কিন সামরিক বিভাগের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। খুনে রোবটের ব্যবহারে যুদ্ধের প্রলয়ঙ্কর দিকটা যে আরও অন্ধকারের দিকে যাবে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।