আর্সেনিক দূষণ সারা পৃথিবী জুড়েই একটা ভয়াবহ সমস্যা। ভারত সহ অনেকগুলো উন্নয়নশীল দেশ আর্সেনিকের সমস্যায় ভুগছে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে পানীয় জলে মিশে থাকা এই বিষ থেকে বাঁচানো সরকার আর প্রশাসনের জন্য অবশ্যকর্তব্য। ফরাসী বিজ্ঞানীদের একটা দল এই কাজটাই একটু সহজ করে দিলেন। এমন একটা উপায় তাঁরা আবিষ্কার করেছেন যাতে জলে মিশে থাকা অতি সামান্য পরিমাণ আর্সেনিকের উপস্থিতিও ধরা পড়বে।
ভূগর্ভের একটা স্তরের নাম ক্রাস্ট। এই স্তরে স্বাভাবিক ভাবেই আর্সেনিক মজুত থাকে। ভূগর্ভস্থ জলের সাথে তাই সহজেই মিশে যেতে পারে এই ক্ষতিকারক মৌলটা। প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ১০ মাইক্রোগ্রামের চেয়ে যেন বেশি না হয় আর্সেনিক – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কড়া মাপকাঠি।
কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, আর্সেনিক শনাক্ত করার কাজে সময় আর টাকা দুটোই অনেক বেশি খরচ হয়। নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি আর্সেনিক থাকা সত্ত্বেও গোটা পৃথিবী জুড়ে কমপক্ষে ১৪০ মিলিয়ন মানুষ সেই দূষিত জলই পান করতে বাধ্য হয়। বিপদ শুধু এটাই নয়। আর্সেনিকের দুটো মূল প্রকারভেদ AS(III) আর AS(V) সহজে পৃথক করা যায় না। প্রথমটা তুলনায় বেশি বিষাক্ত। অর্থাৎ, মোদ্দা কথাটা হল আর্সেনিক শনাক্ত করাটা যেমন অসুবিধের ছিল এতদিন তেমনই কতটা বিষাক্ত সেই জল তা বলারও উপায় ছিল না।
সমস্যার সমাধানে ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা সেন্সর তৈরি করেছেন বিশেষ প্রযুক্তিতে। একটা পাত্রে তরলের মধ্যে দ্রবীভূত রুপো বা সিলভার ধাতু। ঐ পাত্রে ডোবানো থাকবে কাচের তৈরি পাতলা প্লেট। সামান্য আর্সেনিকের উপস্থিতিতেই একটা রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে প্লেটে জমা হবে অল্প পরিমাণ সিলভার। এক লিটার জলে এক মাইক্রোগ্রাম আর্সেনিক থাকলেও সেটা ধরা পড়বে। উপরন্তু পৃথক করা যাবে দুই ধরণের আর্সেনিকও।
‘জার্নাল অফ অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স’ নামক পত্রিকায় প্রকাশিত হল এই গবেষণাপত্র।