আমাদের সৌরজগতের প্রাক্তন গ্রহ প্লুটো। ২০১৫ সালে নিউ হরাইজেন নামের মহাকাশযান এই গ্রহের খুব কাছ দিয়ে উড়ে গিয়েছিল। এমনিএমনি নয়, গ্রহ আর তার উপগ্রহ চ্যারনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে বলেই। আট বছর অতিক্রান্ত হলেও, এখনও সেই সব আলোকচিত্র আর অন্যান্য তথ্য নিয়ে গবেষণায় লেগে রয়েছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা।
উপগ্রহ চ্যারনের গায়ে লম্বা লম্বা ফাটলের মতো দাগগুলো নিয়ে গবেষক মহলে অনেক আগে থেকেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি ব্যাখ্যা এলো বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে। তাঁরা বলছেন, চ্যারনের ভেতরে অবস্থিত সমুদ্র জমে বরফ হয়ে যায়, বৃদ্ধি পায় আয়তনে। বিষয়টা ফ্রিজে রাখা জল ভর্তি বোতলের মতো। একবার হিমায়িত হওয়ার পর আয়তনে বেড়ে যাওয়ার জন্যেই ফাটলগুলোর সৃষ্টি হয়েছে।
সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের মহাকাশ-ভূতাত্ত্বিক ডঃ অ্যালিশা রোডেন জানিয়েছেন, চ্যারনের মাটির নিচে তরল সমুদ্রের জন্যেই এমনটা ঘটে। ভূতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা তো রয়েছেই, সাথে তাপীয় বিবর্তনের বিষয়টাও গুরুত্বপূর্ণ। যখন গোটা সমুদ্র হিমায়িত হয়, তখন বরফের চাঙড়ের উপর অত্যন্ত চাপ পড়ে। নিচে থাকা জলস্তরের উপর সেই চাপটা প্রযুক্ত হয়। চ্যারনের বুকে বড়ো বড়ো খাত আর লাভাস্রোতেরও প্রমাণ মিলেছে।
এমনিতেই চ্যারনের আকার যথেষ্ট বড়ো – প্লুটোর অর্ধেক। আর দূরত্বের হিসেবে এই উপগ্রহ খুবই কাছে রয়েছে বামন গ্রহের। এই দুটোকে একসাথে ‘ডাবল ডোয়ার্ফ প্ল্যানেট সিস্টেম’-ও বলা হয়ে থাকে। এমনকি প্লুটো আর চ্যারন দুজন দুজনকে কেন্দ্র করে ঘোরে। চ্যারনের গায়ে এই ফাটলের মতো দাগগুলোকে ‘চ্যাসমস’ বলে। ক্রমশ স্ফীত হতে থাকা বরফের পুঞ্জ থেকেই সমুদ্রের সৃষ্টি আর সেই সমুদ্র যখন হিমায়িত হয় তখন চাপের ফলে সৃষ্টি হয় ঐ চিড়গুলো।