বৃহস্পতির উপগ্রহের সংখ্যা অনেক, ৮০টা। তাদের মধ্যে সবচেয়ে কাছাকাছি আছে আইও। কেমন এই উপগ্রহটা? ফুটন্ত গরম লাভার হ্রদে পরিপূর্ণ এর উপরিতল। কয়েকশো সক্রিয় আগ্নেয়গিরির দাপাদাপি সর্বক্ষণ। কোনও কোনও পাহাড় থেকে গলিত পাথর বিস্ফোরণে ছিটকে উঠছে কয়েক কিলোমিটার উপরে। এতও বছর ধরে আইও-র অবিরাম এই তাণ্ডবলীলা মহাকাশবিজ্ঞানীদের আকৃষ্ট করে রেখেছে। কিন্তু এই উপগ্রহের কেন্দ্রকে কী রয়েছে? মাটির নীচে কেমন পরিবেশ?
পাসাডেনায় নাসার জেট প্রপালশান ল্যাবরেটরির গ্রহবিজ্ঞানী স্যামুয়েল হোয়েল বলছেন, গোটা সৌরজগতের মধ্যে আইও-তেই আগ্নেয় সক্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। কিন্তু এখনও স্পষ্ট নয় এই শক্তির উৎস ঠিক কোথায়।
গবেষকদের মধ্যে সাধারণ একটা ধারণা যদিও রয়েছে। বৃহস্পতি এবং তার অন্য একটা উপগ্রহ ইউরোপার মধ্যে অভিকর্ষের দড়ি টানাটানি খেলা চলে। তার মাঝে পড়েই আইও-র এমন দশা। এই বিরাট আকর্ষণ বলের প্রভাবেই আইও-র ভেতর থেকে পাথুরে মাটি উঠে আসে। ফলে বিপুল ঘর্ষণ বলের দরুন প্রচণ্ড তাপের জন্ম হয় উপগ্রহের অভ্যন্তরে। কিন্তু এই শক্তি সঞ্চিত হয় কীভাবে? বা অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে কীভাবে? এই প্রশ্নগুলোর সদুত্তর কিন্তু মেলেনি এতদিনে।
বিজ্ঞানীদের এখনকার ধারণাটা শোনা যাক। ওনাদের মতে, আইও-র মাটির নীচে সুবিশাল এক ম্যাগমার সমুদ্র রয়েছে। অ্যামেরিকার জিওফিজিক্যাল ইউনিয়নের বৈঠকে গত মাসে ক্যালটেকের বিজ্ঞানী ডেভিড স্টিভেন্সন এমন তত্ত্বই পেশ করলেন। ওনার মতে, এই ম্যাগমার সাগর ১০০ কিলোমিটার গভীর হতে পারে।