আমাদের মাথার উপরে কুড়ি হাজার কিলোমিটার উচ্চতায়, মহাকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে ৩১টা কৃত্রিম উপগ্রহ। ফারিস্তার মতো এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমেই আমরা বুঝতে পারি পৃথিবীতে ঠিক কোন জায়গায় আমরা রয়েছি। এই একত্রিশটা স্যাটেলাইটের দলকেই একত্রে গ্লোবাল পোজিশানিং সিস্টেম বা সংক্ষেপে জিপিএস বলে ডাকা হয়। কিন্তু এই ব্যবস্থা কাজ করে কীভাবে? তাও পৃথিবীর বাইরে থেকে? যদি হঠাৎ এটা কাজ করা বন্ধ করে দেয়? তখন কি পুরাতন গাইডবুকে ফিরে যেতে হবে আমাদের?
একটা পরিস্থিতি নেওয়া যাক। স্মার্ট ঘড়ি হাতে পরে কেউ দৌড়তে বেরিয়েছে। এবার ঠিক কতদূর আপনি এলেন কিংবা কোথায় এখন আছে সেটা যদি জানতে হয় তাহলে জিপিএস থেকে পাঠানো রেডিও তরঙ্গের উপর ভরসা করতে হবে। যখন হাতের ঘড়িটা ওই একত্রিশটা স্যাটেলাইটের মধ্যে কমপক্ষে চারটের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে, তখন ব্যবস্থাটা কার্যকরী হবে। বেশ ভালো আন্দাজ পাওয়া যাবে ওই ব্যক্তির অবস্থান সম্পর্কে, এমনকি সেটা মিটারের হিসেবেও হতে পারে।
১৯৭৮ সালে প্রথম ন্যাভস্টার জিপিএস নামে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৯৩ সালের মধ্যে গোটা ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে মোট ২৪টা স্যাটেলাইট। মাঝারি দূরত্বের কক্ষপথে তাদের বসানো হয়। যেখান থেকে পৃথিবীকে পরিষ্কার দেখাও যাবে, আবার সেখান থেকে রেডিও তরঙ্গও পাঠানো যাবে সহজেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম এই জিপিএস ব্যবস্থা গড়ে তোলে সামরিক প্রয়োজনে। কিন্তু বর্তমানে গোটা পৃথিবীর বহু মানুষই কোনও না কোনও ভাবে জিপিএস-এর উপর নির্ভরশীল।