যতই ঢুলুঢুলু দেখতে লাগুক, যতই মনে হয় সাত কুঁড়ের এক কুঁড়ে, শ্লথ কিন্তু অন্য অনেক প্রাণীর চেয়ে বেশি শক্তিশালী। নাহলে কেবল ল্যাকপ্যাকে আঙুলের সাহায্যে এক গাছ থেকে অন্য গাছে ঘুরে ঘুরে বেড়িয়ে জীবন কাটানো তাদের পক্ষে সহজ হত না। কিন্ত মজার ব্যাপার এটা নয়। নিউ ইয়র্ক ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির অ্যানাটমি-বিজ্ঞানী মেলোডি ইয়াং ও তাঁর সহকর্মীরা নতুন এক গবেষণায় দাবী করেছেন শ্লথ আসলে ন্যাটা। তাদের শরীরের বামদিকটা বেশি সচল।
গবেষকরা পরীক্ষার জন্যে বেছে নিয়েছিলেন বাদামি-গলার তিন-আঙুলে শ্লথকে। এমন পাঁচটা শ্লথের শারীরিক শক্তি দেখার জন্যে গাছের ডালের মতোই কৃত্রিম অবলম্বন তৈরি করেছিলেন ওনারা। দেখা গেল, ৩.৮ কেজির এই শ্লথের ডিজিটাল ফ্লেক্সর পেশিতে মানুষ বা অন্য প্রাইমেটদের তুলনায় দ্বিগুণ শক্তি রয়েছে। কিন্তু ব্র্যাডিপাস ভেরিগেটাস নামের এই শ্লথের শরীরের ডান ও বাম দিকের মধ্যে ১৬% ফারাক রয়েছে। এই পার্থক্যটা শক্তির নিরিখে, বিশেষত যেভাবে তারা গাছের ডালে ঝুলে থাকে।
আশ্চর্যের বিষয় এই যে মানুষ-সহ বেশিরভাগ বানরজাতীয় প্রাণীই কিন্তু শরীরের ডান দিক বেশি ব্যবহার করে। তাই তাদের ন্যাটা বলা চলে না সাধারণত। গবেষক দল তাঁদের প্রতিবেদনে লিখেছে, শ্লথের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে শরীরের বাম দিকের উপর বেশি নির্ভর থাকার ঘটনা কিন্তু অপ্রত্যাশিত। এটার নেপথ্যে অবশ্যই কোনও বাস্তুতান্ত্রিক প্রভাব রয়েছে। বিবর্তনের জন্যে শ্লথের কঙ্কালতন্ত্রে এমন কোনও গুরুত্বপূর্ণ বদল ঘটেছিল যা অন্য প্রাইমেটদের ক্ষেত্রে একেবারেই বিরল বলা চলে।