আমরা সবাই জানি, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুর প্রকোপ জনস্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক। এখন দেখা যাচ্ছে, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধক শুধুমাত্র অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া মানুষের শরীরে পাওয়া যাচ্ছে তা নয়, যারা সম্প্রতি কোনো অ্যান্টিবায়োটিক খান নি তাদের শরীরেও পাওয়া যাচ্ছে। যে দেশের মানুষ বেশি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন, সেই দেশের অন্যান্য মানুষের শরীরে এই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে, তবে যে দেশে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার কম, সেখানে মানুষের শরীরে এই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু এখনও কম।
একদল আন্তর্জাতিক গবেষকদের সাথে ইউরোপের আর্লহ্যাম ইনস্টিটিউট এবং কোয়াড্রাম ইনস্টিটিউটের একটা গবেষণায় বলা হয়েছে, আমাদের বাড়িতে বা শরীরে যে সমস্ত অণুজীব দেখা যায়, তা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধীর উৎস হতে পারে। আর আশ্চর্য বিষয় হল, আমাদের আশেপাশে যে সমস্ত মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করছে, তাদের থেকেও আমরা সরাসরি অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে যেতে পারি।
ইউরোপের আর্লহ্যাম ইনস্টিটিউট এবং কোয়াড্রাম ইনস্টিটিউটের ক্রিস কুইন্স জানিয়েছেন, সুস্থ স্বাভাবিক একজন মানুষ যিনি সাম্প্রতিক কালে অ্যান্টিবায়োটিক খান নি, তিনি যখন তার পোষ্য বা কোনো মানুষের সাথে মেলামেশা করছেন, তখন তার শরীরে, অন্ত্রে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু প্রবেশ করতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিক যেমন রোগ জীবাণুর সাথে লড়াই করে, তাকে ধ্বংস করে, তেমন তা আমাদের শরীরের অনেক উপকারী অণুজীব ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু আমাদের শরীরে প্রচুর অণুজীব বসবাস করে, যা আমাদের শরীরের ক্ষতি করেনা, বরং তারা আমাদের অনেক উপকারে লাগে। যেমন, অন্ত্রে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া বা অণুজীব বসবাস করে, যারা আমাদের হজমে সাহায্য করে। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে গেলে এই ব্যাকটেরিয়াগুলো অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়, যাতে আমাদের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় সমস্যা হয়।