কথাটা আজকের নয়। বহু শতাব্দী ধরেই নাবিকদের অভিযোগ রয়েছে দক্ষিণ গোলার্ধ নিয়ে। এদিকে নাকি ঝড়ঝঞ্ঝার ঘনঘটা তুলনায় বেশি। প্রবল সব ঘূর্ণিঝড় যেন ওঁত পেতে বসে থাকে। তুলনায় উত্তর গোলার্ধ অনেকটাই শান্ত। শেষ অবধি কৃত্রিম উপগ্রহের তথ্য খুঁটিয়ে দেখে বিজ্ঞানীরাও সায় দিচ্ছেন নাবিকদের অভিযোগে।
ঝড়ের সংখ্যার দিক থেকে দক্ষিণ গোলার্ধ এগিয়ে আছে প্রায় ২৪%। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহবিজ্ঞানী টিফ্যানি শ ওনার গবেষণাপত্রে প্রথম এই বিষয়টার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেটা প্রকাশিত হল প্রোসিডিংস অফ দ্য ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস পত্রিকায়। দুটো মূল কারণ শয়ের গবেষক দল খুঁজে পেয়েছেন – সাগরের স্রোত আর বড়ো বড়ো পর্বতশ্রেণী।
পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মকানুন প্রয়োগ করে পৃথিবীর জলবায়ুর একটা নিউমেরিক্যাল মডেল তৈরি করা হয়েছিল। উত্তর গোলার্ধে বিস্তৃত পর্বতমালার সংখ্যা তুলনায় বেশি। বাতাসের গতিবিধি আটকে দিয়ে এইসব পর্বতশ্রেণী ঝড়ঝঞ্ঝার সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
সমুদ্রের জল পৃথিবী জুড়ে একটা নির্দিষ্ট কনভেয়ার বেল্টের মতো কাজ করে। সমুদ্রের এই স্রোত সুমেরু অঞ্চলে জলের গভীরে থাকে আর সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয়। তারপর অ্যান্টার্কটিকার কাছাকাছি আবার সাগরের উপরিতলে উঠে আসে ঐ স্রোত, সাথে বিপুল শক্তিও থাকে। ফলে স্বভাবতই দুই গোলার্ধের সমুদ্র স্রোতের মধ্যে শক্তির ফারাক তৈরি হয়। দক্ষিণ গোলার্ধে শক্তির পাল্লা ভারী বলে সেদিকেই ঝড়ঝাপটার তাণ্ডব বেশি।