সমুদ্রের জলে সাবানের ফ্যানার মতো কিংবা তেলের মতো কোনও অবাঞ্ছিত পদার্থকে কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে সহজেই শনাক্ত করা যায়। আবার মাইক্রোপ্লাস্টিকের স্বভাব হল এই সাবান বা তেলের সঙ্গে আটকে যাওয়া। দুয়ে দুয়ে চার করেই এবার নতুন প্রযুক্তি আনতে চলেছেন মিচিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তাতে মহাকাশে প্রদক্ষিণরত স্যাটেলাইট থেকেই সমুদ্রের স্বাস্থ্যের খুঁটিনাটি তদারকি করা যাবে।
প্লাস্টিকের একেবারে ছোট ছোট টুকরোকে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। সমুদ্র তীরবর্তী শহর, শহরের কলকারখানা, বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্র থেকে নির্গত করে সাগরের উজানে কোথায় কোথায় যে পৌঁছতে পারে এই অণুপ্লাস্টিক, তার ইয়ত্তা নেই। হয়তো দেখা গেল, দিঘার সৈকত থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের মাঝে ঘুরে বেড়াচ্ছে মাইক্রোপ্লাস্টিকের দাম। সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র, প্রাণী আর উদ্ভিদের সরাসরি ক্ষতি করতে পারে। আবার এই অণুপ্লাস্টিক শনাক্ত করা বা পরিষ্কার করার পদ্ধতিও খুবই জটিল।
কিন্তু এবার আশার আলো দেখছেন বিজ্ঞানীরা। স্যাটেলাইটের নজরদারিতে জানা যাবে কোথায় এই মাইক্রোপ্লাস্টিক সমুদ্রে এসে মিশল, স্রোতে ভেসে কতদূর গেল আর ঠিক কোথায় তাদের এককাট্টা করে জল থেকে সরিয়ে দেওয়া যাবে।
সাইক্লোন গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম দ্বারা সংগৃহীত তথ্য গবেষকরা দেখেছেন। সমুদ্রের মাঝে যেখানে যেখানে কম সংখ্যায় ছোট ছোট ঢেউ থাকে, সেই সব অংশেই জমা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক। এসব জায়গায় সমুদ্রতলের উপরটা মোটামুটি মসৃণ থাকে। চীনের ইয়াংঝি নদীটা উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে যেখানে মিশেছে, সেখানে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক জমা হয়। গ্রেট প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচ। সেই অঞ্চলে পরীক্ষা চালিয়ে স্যাটেলাইটের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
সায়েন্টিফিক রিপোর্টস পত্রিকায় প্রকাশিত হল এই নতুন গবেষণাপত্র।