একটা আর্দ্র, বুদবুদ ভরা ময়দা থেকে একটি নরম তুলতুলে পাঁউরুটির স্লাইস তৈরি হয়ে যায়। ওভেনের তাপ ও ময়দায় থাকা জলের কারণে ময়দার স্টার্চ ফুলে ফেঁপে ওঠে এবং জেলটিনাইজ করে। ঠিক যেমন সসে ময়দা যোগ করে সেটিকে ঘন করা হয়। এই জেলটিনাইজড স্টার্চ হজম করা সহজ। এই স্টার্চে থাকা গ্লুকোজ বা শর্করা আমাদের কোশ সহজে শোষণ করতে পারে। অনেক তাজা রান্না করা স্টার্চযুক্ত খাবারের ক্ষেত্রেই এটি সত্য, বিশেষ করে যেসব খাবারে ফাইবার কম যেমন ময়দা দিয়ে তৈরি পাঁউরুটি বা আলু। কিছু কিছু অধ্যয়ন থেকে জানা যায় যে এই ধরনের খাবার খাওয়ার পরেই শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। যদিও ইনসুলিন আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি শক্তি উৎপন্ন করতে আমাদের কোশকে গ্লুকোজ ব্যবহার করতে সাহায্য করে, তবে শরীরে অত্যধিক ইনসুলিন আমাদের ক্ষুধার্ত করে তোলে এবং সম্ভবত ওজনও বাড়াতে পারে। যখন এই জেলটিনাইজড স্টার্চযুক্ত খাবারকে ঠান্ডা করা হয়, তখন ফুলে ওঠা স্টার্চ আবার সঙ্কুচিত হয়, যা রেজিস্টেন্ট স্টার্চ নামে পরিচিত। আমাদের পরিপাকতন্ত্রের এনজাইম এই সংকুচিত স্টার্চকে ভাঙতে পারে না। ফলে এই স্টার্চে থাকা চিনি আমাদের কোশগুলো শোষণও করতে পারে না। অর্থাৎ এই রেজিস্টেন্ট স্টার্চ খাওয়ার পরে রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিনের ‘স্পাইক’ হওয়ার সম্ভাবনা কম। যে মাত্রায় এই ধরনের স্টার্চ তৈরি হয় তা নির্ভর করে পাউরুটির বেকিং তাপমাত্রা এবং তারপরে এটি হিমায়িত করে রাখা হয়েছে কিনা তার উপর। রেফ্রিজারেটরের তুলনায় ফ্রিজারে সংকোচনের হার প্রায় দ্বিগুণ, যার অর্থ বেশি পরিমাণে রেজিস্টেন্ট স্টার্চ তৈরি হবে। এছাড়াও, হিমায়িত রুটি জলকে ধরে রাখে এবং রুটি তাজা এবং নরম রাখে– কিন্তু যদি এটি ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয় তবে জল শুকিয়ে রুটি শক্ত হয়ে যায়। তবে এটি লক্ষণীয় যে এই প্রভাব রুটি খাওয়ার কয়েক ঘন্টা পর্যন্তই বিদ্যমান তাই ক্ষুধা, ওজন বৃদ্ধি বা নির্দিষ্ট কিছু রোগের ঝুঁকির যেমন টাইপ ২ ডায়াবেটিস-এর উপর এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আছে কিনা তা জানা যায়নি। রেজিস্টেন্ট স্টার্চ অন্যান্য অনেক রান্না করা এবং ঠাণ্ডা স্টার্চি খাবার যেমন আলু, পাস্তা এবং কিছু ধরনের চাল যেমন বাসমতি চালে পাওয়া যায়।