হাম্পব্যাক তিমিদের ক্লান্ত বিষাদী সুরের গান কি একাকীত্বের ফসল? অস্ট্রেলিয়ায় এই জাতের তিমিদের নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন তাদের মতে, এই তিমির সংখ্যা যত বাড়ে ততই কমে আসে গান।
অস্ট্রেলিয়ার কাছেই গ্রেট ব্যারিয়ার রীফ বা প্রবাল প্রাচীর। সেখানে প্রজনন সারে হাম্পব্যাক জাতের তিমিরা। সেই তিমিদের নিয়ে দু দশকের বেশি সময় ধরে গবেষণা করছেন সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী শ্রীমতী রেবেকা ডানলপ। তাঁর কথায়, হাম্পব্যাকের ডাক কিন্তু বেশ জোরালো, সমুদ্রে অনেকদূর অবধি যায় সেই শব্দ।
রেবেকার মতে, শেষ এক দশকে হাম্পব্যাকের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। প্রত্যাবর্তন বলা যায়। বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকার বন্ধ করার পর থেকেই সুফল চোখে পড়েছে। তারপরেই এই বিস্ময়কর বিষয় নজরে আসে রেবেকা ডানলপের। মজার ছলে তিনি বলছেন, এখন আর গায়ক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ব্রিসবেনের কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন উনি। তাঁর মতে, যখন তিমিরা সংখ্যায় কম ছিল তখন কিন্তু গানের তোড় ছিল জোরদার। এখন যখন সংখ্যায় বেশি, তাদের আর গান গেয়ে সঙ্গিনীকে আমন্ত্রণের প্রয়োজন পড়ে না।
১৯৭০ সাল নাগাদ, জলের নিচে ব্যবহারযোগ্য মাইক্রোফোন যখন চলে এলো, তখন থেকেই হাম্পব্যাক তিমিদের গান রেকর্ড করছেন সমুদ্র-গবেষকরা। স্ত্রী সঙ্গীকে কাছে ডাকতে এই গান পুরুষ হাম্পব্যাকই গায়। এটা এক ধরনের শক্তি প্রদর্শনও বলা চলে।
পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রে হাম্পব্যাকের সংখ্যা কমতে শুরু করে ১৯৬০ সাল থেকে। তখন মাত্র ২০০টা তিমি বেঁচে ছিল। কিন্তু সমুদ্রে শিকার আর মাছধরার নিয়মকানুনে কড়াকড়ি আনার পর থেকে ছবিটা পাল্টাতে থাকে। ২০১৫ সালের হিসেব বলছে, হাম্পব্যাকের সংখ্যা অস্ট্রেলিয়ার ওই প্রান্তে ২৭০০০-এ দাঁড়িয়েছে। গান নাই শোনা যাক, তিমিদের দল যে ভারি হয়েছে এটাই সুখের।