হামিংবার্ডের এক প্রকৃতিদত্ত ক্ষমতা রয়েছে। তারা তাদের ডানা মোচড়ানোতে বেশ কুশলী আর তার ফলে তারা যেমন পিছনের দিকে যেতে পারে আবার উল্টো হয়ে উড়তেও পারে। হামিংবার্ড এক অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করে ছোটো ছোটো গর্তের ভিতর দিয়েও গলে যেতে পারে।
বেশিরভাগ পাখি, কব্জিতে তাদের ডানা মুড়তে বা বাঁকতে পারে, ডানাগুলোকে তাদের দেহের কাছে টেনে নিতে পারে যাতে ঘন গাছপালা ভেদ করে বনের পথে উড়তে পারে। কিন্তু হামিংবার্ডের ডানা ততটা নমনীয় নয়। যেহেতু ডানাগুলো হামিংবার্ডের শরীর থেকে সোজা বেরিয়ে আসে, তাই ছোটো জায়গার মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়। ছোটো গর্তের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় গর্তের দেয়ালে যাতে আঘাত না লাগে তার জন্য পুরো ডানা মেলে ওড়ার পরিবর্তে পাখিটি প্রথমে বেশ কয়েকবার গর্তের কাছে গিয়ে তার ডানা ঝাপটায় তারপর ডানা শরীরের সঙ্গে ভাঁজ করে বুলেটের গতিতে গর্ত দিয়ে উড়ে যায়। মার্ক ব্যাজার ও তার সহকর্মীরা চারটি বন্য হামিংবার্ড নিয়ে তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেন। তারা দুটো খাবার জায়গার মাঝে একটা দেয়াল তৈরি করেছিলেন এবং সেই দেয়ালে ৬ থেকে ১২ সেমি ব্যাস বিশিষ্ট একটা গর্ত রেখেছিলেন। ব্যাজারের মতে একটা খাঁচা থেকে আর একটা খাঁচায় খাবারের সন্ধানে উড়ে যাওয়া হামিংবার্ডগুলো পর্যবেক্ষণকারী কম্পিউটারের পর্দায় অস্পষ্ট ছিল। কিন্তু গর্তের পাশে এবং নীচে স্থাপন করা উচ্চ-গতির ক্যামেরার মাধ্যমে দেখা যায় যে পাখিগুলো সেই ছোটো গর্তের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় খানিকটা কাত হয়ে গর্ত মধ্যে দিয়ে ঝাঁপ দেয় বা সাইডওয়ে ফ্লাইট ব্যবহার করে। ইউসি বার্কলের এক ফিজিওলজিস্ট রবার্ট ডুডলির মতে এই কাত হয়ে ওড়ার পদ্ধতিটি বেশ চমকপ্রদ ঘটনা কিন্তু সেই গর্তের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় ওড়ার উচ্চতার পরিবর্তন না করে প্রথমে গতি ধীর করা তারপর কাত হয়ে উড়ে যাওয়া একটি অভিনব আচরণ যা আগে কখনও দেখা যায়নি। ব্যাজারের মতে হামিংবার্ডরা পরীক্ষগারে এই ওড়ার পদ্ধতি আয়ত্ত করেছে নাকি তারা তাদের সহজাত কৌশল অবলম্বন করেছে তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু চারটি পাখিই সাইডওয়ে ফ্লাইট দিয়ে শুরু করেছিল এবং বুলেটের মতো গতিতে গর্তের মধ্যে দিয়ে উড়ে গিয়েছিল আর সম্ভবত তার এই প্রকৌশল বন্য পরিস্থিতিতেও ব্যবহার করে।