ক্যানাডার স্বাস্থ্য-অর্থনীতিবিদ রবার্ট ইভান্স পুরনো একটা বিতর্ক উস্কে দিলেন। বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবাকে তিনি আখ্যা দিলেন জোম্বি বলে। অর্থাৎ বস্তাপচা পরিকল্পনা যেগুলো কবর খুঁড়ে ফের উঠে আসছে। অন্য সব ছদ্মবেশে।
চিকিৎসা পরিষেবার খরচ নিয়ে উনি কথা বলছিলেন। এই খরচ বা ফি-র বকলমে অর্থ হল এই যে গরীব মানুষ চিকিৎসা পাবে না। উল্টোদিকে, বড়লোকের প্রয়োজন না থাকলেও সে পেতে পারে। কিন্তু আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, পরিষেবার খরচের ফর্দটা বানাতে আমলাতন্ত্রের সাথেও খাতির রাখতে হয় বেসরকারি সংস্থাকে। নতুন বিপদ ঐখানেই। সামাজিক ব্যয়ে নির্ভরশীল স্বাস্থ্য পরিষেবা চলে যাচ্ছে মুনাফাসর্বস্ব কোম্পানির কাছে। মাঝখানের সেতুটা আমলাতন্ত্র, যা বেশিরভাগ দেশেই শক্তিশালী এবং জনগনের চোখের আড়ালেই থেকে যায়। এটাকেই ইভান্স সাহেব জোম্বির ফিরে আসা বলে সম্বোধন করলেন।
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বেসরকারি ব্যবস্থার মুখ একটা নয়। অনেকগুলো ঘুরপথ (বা মুখোশ) রয়েছে। ব্রিটিশ কলোম্বিয়াতে ডাক্তারদের অফিস থেকে রোগীর দেয় ফি অথবা সাবস্ক্রিপশানের খরচ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আবার স্বাস্থ্য পরিষেবা সামলানোর জন্যে নতুন নতুন কর্পোরেশনের উদয় হচ্ছে।
কিউবেক প্রদেশে স্বাস্থ্যকর্মী জোগান পেতে বেসরকারি সংস্থার উপর নির্ভরতা বেড়েই চলেছে। ঐ প্রদেশে স্বাস্থ্য খাতে প্রশাসনের খরচের সিংহভাগ যাচ্ছে এই উদ্দেশ্যেই। অন্টারিওতে ছবিটা আলাদা। সেখানে লাভের জন্য দীর্ঘমেয়াদি বিছানার (রোগীর বেড) কিনতে প্রশাসন অনেক টাকা ঢালছে।
কিন্তু রবার্ট ইভান্সের মতে, বিকল্প অবশ্যই আছে। সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিনিয়োগ যখন আছে, তখন এই ক্ষেত্রটা বিকশিত হবে না কেন? কেন সামাজিক ব্যয়ে পরিচালিত স্বাস্থ্যক্ষেত্রের মধ্যে খাপছাড়া অসম্পূর্ণ বিষয়গুলো কম করা যাবে না? জোম্বিকে খতম করা আশু কর্তব্য বলেই মনে করছেন রবার্ট ইভান্স।