২০১৩ সালের একটা রিপোর্টের উল্লেখ করা যাক। ন্যাশনাল ওশিয়ানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশান জানিয়েছিল, বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ ৪০০ পিপিএম-এ পৌঁছেছে। তিন মিলিয়ন বৎসর আগে প্লিওসিন যুগের পর এই প্রথম।
এই যুগান্তকারী রিপোর্টের পর থেকে গুটিকয়েক উন্নত দেশ কার্বন নিঃসরণে নজরদারি চালানোর কাজ শুরু করে। অ্যামেরিকা অবশ্যই তাদের মধ্যে একটা দেশ। নাসার তরফ থেকে ‘অরবিটিং কার্বন অবজারভেটরি’ বা সংক্ষেপে ওসিও প্রকল্প চালু করা হয়। সেই মিশনের জন্যে দুটো কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। পৃথিবীর উপরে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে কতটা কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়ে বাতাসে মিশছে আর তাতে পরিবেশের কতটা ক্ষতি হচ্ছে সেসব তথ্য সহজেই পাওয়া যাচ্ছিল।
ওসিও-২ স্যাটেলাইটে কার্বন ডাইঅক্সাইডের বিশেষ বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করার জন্যে স্পেক্ট্রোমিটারের ব্যবস্থা ছিল। এই কৃত্রিম উপগ্রহেরই আরেক সঙ্গী ওসিও-৩। আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে এই স্যাটেলাইট প্রেরিত হয়েছে ২০১৯ সালে। এই স্যাটেলাইটের প্রযুক্তি আরও উন্নতি। নির্দিষ্ট শহর ধরে ধরে ছোট ছোট ম্যাপ তৈরি করে বিশদে ধরা পড়ে যায় কতখানি কার্বন নিঃসরণ হয়েছে। মূলত কোনও দেশের বিখ্যাত জনবহুল শহরগুলোকেই তালিকায় রাখা হয়েছিল।
এই গোটা প্রকল্পের মূল গবেষক ও পরিচালক টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানী রে নিসার। কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটি আর নাসার জেট প্রপালশান ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা তাঁকে সাহায্য করেছেন। গত বছরের শেষদিকে ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন রিমোট সেন্সিং’ নামের পত্রিকায় এই বিশেষ মিশনের সম্পূর্ণ কার্যকলাপের বিশদ বিবরণ প্রকাশিত হল।