সূর্যের বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে বাইরের স্তর হল করোনা যা প্লাজমা দিয়ে গঠিত। সূর্যের করোনায় যখন শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রভাবে গরম প্লাজমা শীতল ও ঘনীভূত হয় তাকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘করোনাল রেন’ যা সূর্যের ফটোস্ফিয়ারে পড়ে। এটি সাধারণত সুর্যের সক্রিয় অঞ্চলের সাথে যুক্ত। সূর্যের বায়ুমণ্ডল, ফটোস্ফিয়ারে, যখন এই প্লাজমা পড়ে তখন বৃষ্টির ফোঁটা পড়ার মতোই চারিদিকে আগুনের গোলা ছিটকে যায় বা একটা ‘স্প্ল্যাশ’ তৈরি হয়। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির সৌর অরবিটার এই উজ্জ্বল ফায়ারবলের প্রভাব এবং প্লাজমাতে আকস্মিক ঊর্ধ্বমুখী আলোর বিচ্ছুরণের দৃশ্য প্রকাশ করেছে। ইংল্যান্ডের নিউক্যাসল আপন টাইনের নর্থামব্রিয়া ইউনিভার্সিটির সৌর পদার্থবিদ প্যাট্রিক আন্টোলিন এক গবেষণা পত্রে বলেছেন যে দৃশ্যটি সূর্যের করোনা থেকে পাওয়া সর্বোচ্চ রেজোলিউশনের ছবি।
সূর্যের অজানা অচেনা রহস্য অনুসন্ধানের জন্য সৌর অরবিটার কিছু উচ্চ রেজোলিউশনযুক্ত ক্যামেরা এবং অন্যান্য যন্ত্র নিয়ে সূর্যের অনাবিষ্কৃত মেরু অঞ্চলের উপর দিয়ে গেছে । ২০২২ সালে মার্চের শেষের দিকে, সৌর অরবিটার সূর্যের সবচেয়ে কাছে পৌঁছতে পেরেছিল, প্রায় ৪৯ মিলিয়ন কিলোমিটারের মধ্যে যা সূর্য এবং পৃথিবীর মধ্যে দূরত্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ। মহাকাশযানের তোলা ছবিগুলোতে, অ্যান্টোলিন এবং সহকর্মীরা এক নতুন বৈশিষ্ট্য আবিষ্কার করেছিলেন। সূর্যের ফটোস্ফিয়ারে ঘণীভূত শীতল প্লাজমা পড়ার সাথে সাথে তাদের নীচের অঞ্চলটি উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। গবেষকরা অনুমান করছেন যে এই উজ্জ্বলতা প্লাজমা পতনের ফলে নীচের অংশের প্লাজমা সংকুচিত এবং উত্তপ্ত হওয়ার কারণে ঘটছে। সূর্যের ফটোস্ফিয়ার এবং করোনার মধ্যে অবস্থিত প্লাজমার পাতলা স্তর বা ক্রোমোস্ফিয়ারে আঘাত করার পরেও উপাদানের একটি প্রত্যাবর্তন এবং ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহ গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন। তাদের মতে এই করোনাল রেন ক্রোমোস্ফিয়ারের মতো ঘন। যদিও সূর্যের অনেক রহস্য আজও অজানা তবুও বিজ্ঞানীরা নিরলস চেষ্টা করে চলেছেন সেই রহস্য উন্মোচনের জন্য।