৮ই এপ্রিল, ২০২৪ এর সর্যগ্রহণ নিয়ে আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশে আলাদা উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। গত সাত বছরে এক বারও পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হয়নি আমেরিকায়। নাসার তরফেও একাধিক বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে গ্রহণ দেখার। আগ্রহীরা এই বিরল মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে তোড়জোড় করেছেন। সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদ ঘুরতে ঘুরতে যখন এক সরলরেখায় চলে আসে তখন পৃথিবীর নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চল থেকে সূর্যকে আর দেখা যায় না, চাঁদের ছায়ায় সূর্য পুরোপুরি ঢেকে যায়। এই অবস্থাকে বলে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। এবারের গ্রহণের বিশেষত্ব হল এর স্থায়িত্ব। গ্রহণের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চললেও চাঁদের ছায়া সূর্যকে সম্পূর্ণ ঢেকে রেখেছে চার মিনিট। এই সময়ে পৃথিবীর বুকে নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে নেমে এসেছে অন্ধকার। বিজ্ঞানীরা কিন্তু সূর্যগ্রহণ দেখার সঙ্গে সঙ্গে চোখ রেখেছেন এই সূর্যগ্রহণের সময় বিভিন্ন প্রাণীদের প্রতিক্রিয়ার উপর। তারা দেখেছেন জিরাফ, গোরিলা, সিংহ, ম্যাকাও এবং ফ্লেমিংগোর মতো প্রাণীরা গ্রহণের সময় অস্বাভাবিক আচরণ প্রদর্শন করে। যেহেতু সম্পূর্ণ সূর্যগ্রহণ একটি বিরল ঘটনা, তাই প্রাণীদের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। বিজ্ঞানীরা তাই বেশ কয়েকটি চিড়িয়াখানায় প্রাণী পরীক্ষা করেছেন। চিড়িয়াখানার বেশিরভাগ প্রাণী শান্ত ছিল, কিন্তু গোরিলা, সিংহ এবং লেমুর সহ কয়েকটি প্রাণী, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সতর্কতা এবং আগ্রহ দেখিয়েছিল। অনেক প্রাণী এমন কিছু আচরণ দেখিয়েছে যা রাতের বেলায় প্রদর্শিত হয় যেমন শস্যাগারের দরজার দিকে চলে যাওয়া যেমন- গোরিলা, জিরাফ, হাতি, কুডু, কোটিস, বোনোবোস এবং আলদাবরা কচ্ছপ। অন্যদিকে, নিশাচর প্রাণীরা গ্রহণের ওই অন্ধকারের সময় আরও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। পাখিরা বেশ চুপচাপ হয়ে যায়, ম্যাকাও জাতীয় পাখিরা যারা রাতে প্রায়ই কোলাহল করে, কেমন যেন চুপচাপ হয়ে যায় আর পেঙ্গুইন ও ফ্লেমিংগো একজায়গায় একত্রিত হয়ে চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়। বলা যায় সূর্যগ্রহণের সময় প্রায় ৭৫% প্রজাতির প্রতিক্রিয়ায় পরিবর্তন দেখা গিয়েছিল। যদিও কিছু প্রাণীদের ভয় পেতে দেখা যায় তবে তাদের বেশিরভাগই এমন আচরণ প্রদর্শন করে যা সাধারণত সন্ধ্যায় বা রাতে পরিলক্ষিত হয়।