কার্বন দূষণের পিছনে মানুষের কুকীর্তির অবদান যতটা, ততই গভীর হচ্ছে সমুদ্রের বেহাল দশা। বাতাসে বাড়তি কার্বন বাড়তি তাপও সৃষ্টি করে। সেই তাপ শুষে নেয় সমুদ্র। ফলে সাগরের জলের তাপমাত্রা যে বাড়ছে সেটা কমবেশি আন্দাজ করতে পারে অনেকেই। কিন্তু ঠিক কোন হারে সমুদ্রজলের উষ্ণতা বাড়ছে, প্রতি বছরেই যে নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে এবার কড়া সতর্কবার্তা দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
গত বুধবার একটা রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন একাধিক দেশের গবেষকরা মিলিতভাবে। ডাঙার তাপমাত্রা তো বেড়েইছে জলবায়ু পরিবর্তনের বদান্যতায়। তাতে পরিমণ্ডলের অস্থিরতাও উর্দ্ধগামী। ঘূর্ণিঝড়ের মতো চরম আবহাওয়া বিপর্যয়ের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে।
গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের জন্যে পরিবেশে যে বাড়তি তাপ তৈরি হয় তার ৯০% শোষিত হয় সমুদ্রে। তাতে স্থলভাগের সুরক্ষা কিছুটা হয় বটে। কিন্তু সামুদ্রিক তাপপ্রবাহের স্থায়িত্ব আর ব্যাপকতার বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়া চলে না।
চীন, অ্যামেরিকা, ইতালি আর নিউজিল্যান্ডের একদল গবেষক ঐ রিপোর্টে দাবী করলেন, ২০২২ সালে সাগর-মহাসাগরের জলের তাপমাত্রা ছিল সর্বাধিক। একটা হাড় হিম করা হিসেব ওনারা দিচ্ছেন। ২০২১ সালের তুলনায় গত বছর সমুদ্রের জলে তাপের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১০ জেটা-জুল। যা ২০২১ সালে সারা পৃথিবী জুড়ে উৎপাদিত বিদ্যুৎশক্তির তুলনায় একশোগুণ বেশি!
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিচেল মান ছিলেন ঐ রিপোর্টের মুখ্য লেখকদের একজন। তাঁর ভাষায়, মানুষের ভুলের মাশুল সবচেয়ে বেশি দিতে হচ্ছে সমুদ্রকে। প্রোফেসর মান বলছেন, যতদিন না সত্যিই নেট জিরো লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো যাচ্ছে, ততদিন অবধি প্রত্যেক বছরেই এই রেকর্ড ভাঙতে থাকবে।