একটা মটরের দানার থেকেও ছোটো। একটা মেরুদণ্ডী প্রাণী কতটা ছোটো হতে পারে তা ‘ফ্লি টোড’ নামে পরিচিত এই ব্যাঙটি না দেখলে ধারণা করা যায় না। ২০১১ সালের গবেষণায় ব্রাজিলের সেরা বনিতা পর্বতমালায় ব্র্যাকিসেফালাস পুলেক্সের প্রাথমিক বর্ণনায় তাদের ব্যাঙ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। বর্তমানে গবেষকরা এই ক্ষুদ্র উভচরদের পরিমাপ করেছেন। পূর্বে পাপুয়া নিউ গিনির পেডোফ্রাইন অ্যামায়েনসিস সবচেয়ে ছোটো বলে পরিচিত ছিল, কিন্তু ৭.৭ মিলিমিটার লম্বা ব্যাঙের প্রজাতির পুরুষ ব্যাঙেরা ব্রাজিলিয়ান ব্যাঙেদের তুলনায় আধা মিলিমিটার বেশি বড়ো। গবেষকরা ৪৬টি পুরুষ এবং স্ত্রী প্রজাতির ফ্লি টোড পরিমাপ করেছেন এবং তারা এও নিশ্চিত করেছেন যে প্রতিটি ব্যাঙ সম্পূর্ণরূপে প্রাপ্তবয়স্ক ছিল। তারা দেখেন একটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ফ্লি টোডের গড় মাপ প্রায় ৭.১ মিলিমিটার। সমস্ত ক্ষুদ্র ব্যাঙের স্ত্রী প্রজাতিরা ডিম ধরে রাখার জন্য আকারে সামান্য বড়ো হয়, বি. পুলেক্সের ক্ষেত্রে স্ত্রী ব্যাঙের গড় মাপ ৮.১৫ মিলিমিটার। যদিও আকারে ছোটো হওয়ার অনেক সুবিধা রয়েছে, যেমন খাবারের প্রয়োজন কম হয় বা শিকারীদের চোখ এড়িয়ে যাওয়া যায় কিন্তু আকারে ছোটো হওয়ার কারণে তাদের অসুবিধাও রয়েছে। ২০২২ সালের একটি সমীক্ষা অনুমান করেছে যে মেরুদণ্ডী প্রাণীদের শারীরিক পরিমাপ প্রায় ৬ মিলিমিটার হওয়া উচিত। এই পরিসীমার নীচে হলে একটি মেরুদণ্ডী প্রাণীর মস্তিষ্ক সহ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ তৈরি করতে বা তাদের প্রজাতিকে বাঁচিয়ে রাখতে পর্যাপ্ত ডিম উত্পাদনের জন্য সব ধরনের কোশের উপস্থিতি বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। এই ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকলে ব্যাঙের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো হারিয়ে যেতে পারে, যেমন লাফ দেওয়ার ক্ষমতা বা তাদের নিজস্ব প্রজাতির ডাক শোনার ক্ষমতা। ফ্লি টোড আকারে ছোটো হওয়ার ফলে তাদের পায়ে কম সংখ্যক আঙুল থাকে। তাদের প্রথম এবং চতুর্থ আঙুল সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত, শুধুমাত্র একটি স্বতন্ত্র, লম্বা তৃতীয় আঙুল, ছোটো আকারের দ্বিতীয় আঙুল এবং একটি বিলুপ্তপ্রায় পঞ্চম আঙুল উপস্থিত। তাছাড়া এদের মেরুদণ্ড এবং মাথার খুলি হল একমাত্র শক্ত হাড় বাকি সবকিছু নরম তরুণাস্থি। এই প্রজাতির ব্যাঙের কান অনুন্নত, তাই তারা শুনতে সক্ষম নাও হতে পারে। এখনও পর্যন্ত গবেষকরা তাদের আওয়াজ শুনতে পাননি। এরা পাতার জঞ্জাল থেকে ছোটো ছোটো শিকার খুঁজে বেড়ায় এবং মস, ফার্ন, লাইকেন খায়। গবেষণাটি জুলজিকা স্ক্রিপ্টে প্রকাশিত হয়েছিল।