দাঁতের ক্ষয় হল শৈশবের দীর্ঘস্থায়ী রোগ, ঠিকমতো চিকিত্সা না করা, গহ্বরগুলো শিশুদের দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, বিকাশের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে, এতে দীর্ঘমেয়াদী মৌখিক ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি হতে পারে। গুরুতর আকার ধারণ করলে দাঁতের সংক্রমণ থেকে ব্যাকটেরিয়া শরীরে ঢুকে মৃত্যু ঘটাতে পারে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ-এর বড়ো মাপের ক্লিনিকাল ট্রায়াল থেকে দেখা গেছে সিলভার ডায়ামিন ফ্লোরাইড (এসডিএফ) নামক একটা টপিকাল দ্রবণ ছোটো বাচ্চাদের দাঁতের ক্ষয় বন্ধ করতে পারে। পেডিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট্রিতে প্রকাশিত প্রাথমিক ফলাফল বলছে এসডিএফ চিকিত্সার পরে দাঁতের গহ্বরের অগ্রগতি ৫৪% বন্ধ হয়ে যায়। এসডিএফ-কে দাঁতের সংবেদনশীলতার চিকিত্সা, দাঁতের ক্ষয়, ক্যাভিটি বা ডেন্টাল ক্যারিস চিকিৎসার জন্য স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এটা সহজে দাঁতের গহ্বরের ওপর লেপে দেওয়া যায় যাতে কোনো ব্যথা লাগেনা। এসডিএফ-এর মধ্যে থাকা সিলভার গহ্বর সৃষ্টিকারী জীবাণুকে মেরে ফেলে দাঁতের ধ্বংস বন্ধ করে আর ফ্লোরাইড দাঁতকে পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
বর্তমানে শিশুদের দাঁতে গর্ত হলে অ্যানাস্থেসিয়া দিয়ে দাঁত তুলে ফেলা হয়। এতে খরচ হয়, গর্ত আবার হতে পারে, আর শিশুর বিকাশশীল মস্তিষ্কে অ্যানাস্থেসিয়ার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব থেকে যায়। ট্রায়ালে এক থেকে পাঁচ বছরের শিশু যাদের দাঁত খুব ক্ষতিগ্রস্থ ছিল তাদের দাঁতে একবার এসডিএফ দিয়ে দেখা গেছে, ছমাস দাঁতের ক্ষয় রোধ হয়েছে। এসডিএফ-এর কার্যকারিতা বুঝতে দাঁতের গর্তের কাঠিন্য দেখা হয়েছিল। দেখা গেছে চিকিৎসার আগে গর্তের স্থান নরম ছিল যা চিকিৎসার পরে বেশ কঠিন হয়েছে, অর্থাৎ চিকিৎসায় সাড়া পাওয়া গেছে।
গবেষকরা ৮০০-র ওপর শিশুর চূড়ান্ত ডেটা বিশ্লেষণ করে, দাঁতের ব্যথা এবং জীবনযাত্রার মানের উপর এসডিএফ -এর প্রভাব, সেইসাথে সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি মূল্যায়ন করেছেন। এসডিএফ দাঁতের গহ্বরের রঙকে গাঢ় করে দিতে পারে, যা নান্দনিকভাবে দৃষ্টিকটু। সেক্ষেত্রে শিশু ও তার বাড়ির লোকের সন্তুষ্ট হওয়া জড়িত থাকে। এসডিএফ কার্যকর হলেও সমস্ত গহ্বর এই চিকিত্সায় সাড়া দেয়নি। বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতে এ নিয়ে অধ্যয়ন করবেন।