আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজির জার্নাল- অ্যাপ্লাইড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল মাইক্রোবায়োলজিতে এক নতুন গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে রান্নাঘরের বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়াই ক্ষতিকারক নয় এবং এই গবেষণা ইউরোপের ৫টি দেশের প্রায় ৭৪টি রান্নাঘরে হয়েছে। নরওয়েজিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ফুড, ফিশারিজ এবং অ্যাকুয়াকালচার রিসার্চ, Ås, নরওয়ের খাদ্য নিরাপত্তা ও গুণমান বিভাগের বিজ্ঞানী বির্গিট মোয়েন বলেন যে পূর্বে, ফ্রান্স, নরওয়ে, পর্তুগাল, রোমানিয়া এবং হাঙ্গেরির রান্নাঘরের মান, খাবার তৈরির পদ্ধতি এবং পরিচ্ছন্নতার পদ্ধতিতে যথেষ্ট বৈচিত্র খুঁজে পাওয়া গেছে।
গবেষণায়, রান্নাঘরে ব্যবহৃত সিঙ্ক, কাটিং বোর্ড, কাউন্টার টপস, হ্যান্ডেল এবং পরিষ্কার করার জিনিস যেমন স্পঞ্জ এবং কাপড় – থেকে ব্যাকটেরিয়ার নমুনা নেওয়া হয়েছিল। ব্যাকটেরিয়ার বিভিন্ন প্রজাতি এবং নমুনায় সংগ্রহীত ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে যথেষ্ট বৈচিত্র্য থাকা সত্ত্বেও, গবেষকরা বেশিরভাগ রান্নাঘরে পরিবেশগত উত্সের সাথে যুক্ত ৮টি ব্যাকটেরিয়া জেনারা চিহ্নিত করেছেন, যা তারা “কোর মাইক্রোবায়োটা” নাম দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে অ্যাসিনেটোব্যাকটর, সিউডোমোনাস, এনহাইড্রোব্যাকটর, এন্টারোব্যাকটেরিয়েসি, সাইক্রোব্যাকটর, ক্রাইসিওব্যাকটেরিয়াম, ব্যাসিলাস এবং স্ট্যাফিলোকক্কাস।
প্রতিবেদনে, গবেষকরা জোরের সঙ্গেই বলেছেন রান্নাঘরের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও মূল মাইক্রোবায়োটা একই রয়েছে। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত রান্নাঘরে বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য ছিল যেমন কিছু রান্নাঘরে জলের কল ছিল না, কিছু রান্নাঘরে সিঙ্কের অভাব ছিল এবং কিছুতে ডিশ ওয়াশার ছিল না। অন্যদিকে ভিন্ন ভিন্ন খাদ্য তৈরির পদ্ধতি, খাদ্যাভ্যাস এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও রান্নাঘরের স্বাস্থ্যবিধিতে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও রান্নাঘরের কোর মাইক্রোবায়োটা এক। আমরা জানি যে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া খাবারের মাধ্যমেই ছড়ায়, তাছাড়াও বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ লক্ষ্য করা যায়- যেমন নরওয়েতে স্যালমোনেলার সমস্যা তেমন নেই কিন্তু মেনল্যান্ড ইউরোপে এই ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপে পেটের সমস্যা দেখ যায়। তাই বিজ্ঞানীরা মনে করেন গৃহস্থের রান্নাঘরে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কে তথ্য অনেক ধরনের অসুস্থতা প্রতিরোধে ব্যবহার করা যেতে পারে।