সৌরজগতে সূর্যের জীবন যখন ফুরিয়ে আসবে তখন তা আয়তনে দশগুণ বেড়ে পৃথিবীকে গ্রাস করে ফেলবে। মহাকাশে অন্যান্য নক্ষত্র ও গ্রহের ক্ষেত্রে এটাই সাধারণ ঘটনা। ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই ইনস্টিটিউট ফর অ্যাস্ট্রোনমি (ইউএইচ আইএফএ) এর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নেচার পত্রিকায় জানিয়েছেন, বৃহস্পতি গ্রহের মতো, হাল্লা নামের একটা গ্রহ তার নক্ষত্র বেকডু- র মৃত্যুর পরেও, তার গ্রাস থেকে বেঁচে আছে তা তারা আবিষ্কার করেছেন। নাসার ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট (টিইএসএস) থেকে বেকডুর নাক্ষত্রিক দোলন পর্যবেক্ষণ করে, দেখা গেছে যে এই নক্ষত্রের মূল অংশ বা কেন্দ্রস্থলে হিলিয়াম গ্যাস পুড়ছে, অর্থাৎ এটা লাল দৈত্যাকৃতি নক্ষত্রে পরিণত হয়েছিল, এর কেন্দ্রস্থলে হাইড্রোজেন পুড়ে শেষ হয়ে থার্মোনিউক্লিয়ার ফিউসান হয়েছে, বর্তমানে এর আকার সংকুচিত হয়েছে। বর্তমানে এর থেকে হাল্লার কক্ষ যতটা দূরত্বে, দৈত্যাকার হওয়ার সময় বেকডুর ব্যাস তার ১.৫ গুণ বড়ো হওয়ার কথা, ফলে হাল্লার অস্তিত্ব থাকার কথা নয়।
গবেষকদের মতে হাল্লার নিষ্কৃতি পাওয়ার তিনটে কারণ থাকতে পারে – প্রথম কারণ, যেমন বর্তমান কক্ষ থেকে বৃহস্পতি আরো অনেক দূরে সূর্যকে ঘিরে পরিক্রমা শুরু করেছিল, পরে তার ভর বৃদ্ধি পেতে থাকে, সে সূর্যের দিকে অনেকটা এগিয়ে তার বর্তমান কক্ষ ঘিরে ঘুরতে থাকে মনে করা হচ্ছে, হয়তো হাল্লা বেকেডুরও অনেক দূরত্বে পরিক্রমা শুরু করেছিল, পরে তার কক্ষ পথ বেকেডুর কাছে এগিয়ে এসেছে; দ্বিতীয় কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, হাল্লা দুটো নক্ষত্র ঘিরে ঘুরত, বেকেডু ও সেই অন্য নক্ষত্র একসাথে মিলে গেছে, আর দৈত্যাকৃতি নক্ষত্রে পরিণত হওয়ার সময় এই দুটোর মধ্যে কারোর একটার প্রভাবে হাল্লাকে গ্রাস করার মতো স্ফীতি হয়নি, তৃতীয় কারণ, এই দুটো নক্ষত্রের তীব্র দোলনের ফলে ধোঁয়ার মতো বিরাট পরিমাণ গ্যাস নির্গত হয়েছিল, যা থেকে নতুন এক নক্ষত্র হাল্লা সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে।