এবার ম্যালেরিয়া আটকাতেও অ্যান্টিবডি তৈরি করে ভ্যাক্সিন আসবে? বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ সেরকমই। এরকম ৯জন মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি ঢুকিয়ে দেওয়ার পর ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করা মশার কামড় খেতে দেওয়া হয়েছিল। অ্যান্টিবডির নাম সিএসপি। লক্ষ্য করা গিয়েছে ৯জনের কেউ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হননি। এবং পরবর্তী ৬ মাসের বেশি সময় ধরে সেই আন্টিবডি তাদের ম্যালেরিয়া থেকে রক্ষা করেছে। ম্যালেরিয়া হলে সাময়িকভাবে মানুষ ওষুধ খায় এবং খেয়েও যাচ্ছে। তার সঙ্গে মশাবাহিত অঞ্চলে থাকা মানুষ প্রতিরোধ হিসেবে মশারি, কীটনাশকও ব্যবহার করেন। কিন্তু তারপরও পি ফ্যালসিপুরামে (ম্যালেরিয়ার জীবাণূর ডাক্তারি নাম) প্রত্যেক বছর আক্রান্ত হন অন্তত ২০ কোটি মানুষ আর মারা যান অন্তত চার লক্ষ।
গবেষকেরা এক ব্যাক্তিকে পরীক্ষামূলকভাবে ম্যালেরিয়ার ভ্যাক্সিন দিয়েছিলেন, ব্যাক্তিটির শরীর থেকে আলাদা করে নিয়েছিলেন সিএসপি আন্টিবডি। গবেষকরা দেখেছিলেন এই অ্যান্টিবডি ‘স্পরোজয়েটস’ কে প্রতিরোধ করছে এবং তাতে মানুষটির লিভার আক্রান্ত না হয়ে অক্ষত থাকছে।
যাই হোক, এই গবেষণায় কিছুটা ছেদ পড়েছিল কোভিড-১৯-এর দাপটে। যথেষ্ট পরিমাণে মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি প্রয়োগ করা যায়নি। দু’জনকে দেওয়া গিয়েছিল অ্যান্টিবডি। পরের ৩৬ সপ্তাহ সেই দু’জনের শরীরে ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্রবেশ করতে পারেনি। ২০১৯-এ আফ্রিকার তিনটি দেশে পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া হয়েছিল ম্যালেরিয়ার ভ্যাক্সিন। যার নাম আরটিএস। ৬৫ হাজার শিশুকে দেওয়া হয়েছিল চারটি ডোজের এই ভ্যাক্সিন। চারটি ডোজ যারা নিয়েছিল তাদের ৫০ শতাংশ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়নি। তার স্থায়িত্ব ছিল এক বছর। কিন্তু পরের চার বছরে দেখা গিয়েছিল সেই ৫০ শতাংশটা কমে নেমে গিয়েছে ২৮ শতাংশে। বিজ্ঞানীরা কিন্তু হাল ছাড়েননি। তারা আশাবাদীও যে একদিন ম্যালেরিয়ার এমন ভ্যাক্সিন বের করা সম্ভব হবে যাতে মানুষ অনেক বছর সুরক্ষিত থাকতে পারবে। আশাবাদী ডেনিস বার্টনও, বিখ্যাত ইমিউনোলজিস্ট যাঁর গবেষণায় বেরিয়েছে এইচআইভি, কোভিড-১৯ এবং জিকার মতো মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধির প্রতিষেধক মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি। তবে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি দিয়ে ভ্যাক্সিন খরচ সাপেক্ষ। তাই গবেষণা চলছে এমন ভ্যাক্সিন নিয়ে আসার যার খরচ সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে।