অ্যানিমিয়া এমন একটি শারীরিক অবস্থা যখন শরীরের বিভিন্ন অংশের কলায় অক্সিজেন বহন করার জন্য রক্তে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর লোহিত রক্তকণিকার অভাব ঘটে। প্রাচীন মিশরীয় শিশুদের মধ্যে অ্যানিমিয়া খুব সাধারণ একটা রোগ ছিল। ইউরোপের জাদুঘরের শিশুদের মমি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে গবেষকরা এটা লক্ষ্য করেন। গবেষকরা কম্পিউটেড টমোগ্রাফি (সিটি) স্ক্যান ব্যবহার করে কোনো কাটা ছেঁড়া না করেই মমিদের ড্রেসিংয়ের মধ্য দিয়ে দেখেন যে মিশরে এক-তৃতীয়াংশ শিশুদের মধ্যে রক্তাল্পতার লক্ষণ ছিল এমনকি তারা একটি ক্ষেত্রে থ্যালাসেমিয়া রোগেরও প্রমাণ পেয়েছন।
গবেষকরা তাদের গবেষণাপত্রে বলেন যে মাথার খুলি, মুখের হাড় এবং ধরের কঙ্কালের রেডিওলজির মাধ্যমে সম্ভবত তারাই প্রথম প্রাচীন মিশরীয় শিশুর মমিতে থ্যালাসেমিয়া রোগের চিহ্ন দেখতে পান। প্যালিওপ্যাথোলজিস্ট স্টেফানি প্যানজার এবং তার জার্মান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইতালির সহকর্মীরা এও বলেন যে প্রাচীন মিশরে রক্তাল্পতা একটা সাধারণ রোগ ছিল যার সম্ভব্য কারণ ছিল অপুষ্টি, পরজীবী সংক্রমণ এবং জেনেটিক ব্যাধি যে কারণগুলো আজও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে। গবেষকরা এও অনুমান করেছেন যে তুতেনখামুন সিকেল সেল রোগে মারা গিয়েছিলেন যা কিনা রক্তাল্পতার একটি কারণ।
যেহেতু প্যানজার এবং তার সহকর্মীরা মূলত শিশু মমি নিয়ে গবেষণা করেন তাই তারা ওই শিশু মমির মধ্যে রক্তাল্পতার লক্ষণ দেখতে পান। প্রতিটি শিশুর মৃত্যুর ক্ষেত্রে অ্যানিমিয়ার কোনো ভূমিকা রয়েছে কিনা তা সিটি স্ক্যান থেকে নির্ধারণ করা যায়নি, তবে গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে অ্যানিমিয়া তাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। গবেষকরা খোঁজার চেষ্টা করেছেন সেই সব শিশুরা এমন কোনো রোগে আক্রান্ত হয়েছিল কিনা যার ফলে তাদের রক্তাল্পতা হয়।