নতুন ধরনের সৌর প্যানেল তৈরি করা সম্ভব, যা স্পেস রেডিয়েশন বা মহাকাশীয় বিকিরণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে নিজেকে নিরাময় করে মেরামত করতে পারে। এর ফলে ভবিষ্যতে উপগ্রহ এবং মহাকাশযানের জন্য শক্তির উত্সগুলো আরও স্থিতিস্থাপক এবং নির্ভরযোগ্য হতে পারে।
হালকা এবং তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী পেরোভস্কাইট সোলার সেল (PSC) নামে পরিচিত এক ধরণের সৌর প্যানেল মহাকাশে শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করার জন্য বেশ সম্ভাবনাময় হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। এটা সৌর বিকিরণকে যথেষ্ট কার্যকরীভাবে বিদ্যুতে রূপান্তর করে। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অস্ট্রেলিয়ার সেন্টার ফর এক্সিলারেটর সায়েন্সের এই নতুন গবেষণায় অ্যাডভান্সড এনার্জি মেটেরিয়ালস-এ প্রকাশিত হয়েছে।
তারা জানিয়েছেন, যেহেতু স্পেস হার্ডওয়্যার কক্ষপথে প্রোটন বিকিরণের সংস্পর্শে আসবে, তাই সেটাকে অবশ্যই মহাকাশে প্রোটন কণার উচ্চ-শক্তির ধাক্কা সহ্য করতে হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য মহাকাশে সূর্য ও অন্যান্য নক্ষত্র থেকে উচ্চ শক্তির চার্জযুক্ত কণার বিকিরণ হতে থাকে। এই উচ্চ-শক্তির প্রোটন এবং চার্জযুক্ত কণা রকেট বা মহাকাশযানের আবরণের ক্ষতি করতে পারে। মহাকাশীয় বিকিরণের পরিমাণ সাধারণত কম, কিন্তু প্রভাবগুলি ক্রমবর্ধমান। গবেষকরা জানিয়েছেন, PSC -এর ক্ষেত্রেও বিকিরণে এর স্থিতিশীলতা জানা প্রয়োজন।
পরীক্ষায় তারা দেখেছেন, পিএসসিতে হোল ট্রান্সপোর্ট ম্যাটেরিয়াল (HTM) -এর কতটা ক্ষতি সহ্য করার ক্ষমতা আছে এবং এটা নিজেকে কতটা নিরাময় করতে পারে। এইচটিএম সৌর কোষে গর্ত অর্থাৎ যেখানে ইলেকট্রন অনুপস্থিত, সেগুলো চলাচলের সুবিধা দেয়, তাদের আলাদা থাকতে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সক্ষম করে। বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের উপস্থিতিতে ইলেকট্রন এক দিকে সরে যায় এবং গর্তগুলি বিপরীত দিকে সরে যায়। যেহেতু ইলেকট্রন এবং ছিদ্র উভয়ই চার্জ বহন করে, তারা উভয়ই উপাদানটির পরিবাহিতাতে অবদান রাখে।
গবেষকরা দেখেছেন, দুটি বিশেষ ধরণের HTM এবং এক ধরণের ডোপান্ট (HTM -এ প্রয়োগ করা একটি পরিবর্তনকারী পদার্থ) প্রোটন বিকিরণ ক্ষতি প্রতিরোধ করতে বেশ ভালো। এজন্য কনফিগার করা, HTM প্যানেলগুলো স্ব-নিরাময় করতে সক্ষম এবং তাদের দক্ষতার ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ফিরে আসতে পারে৷
এই নিরাময়টি অ্যানিলিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বা শূন্যস্থানে তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে করা হয়, যে তাপ সূর্য থেকে আসে। অর্থাৎ সৌর বিকিরণ এই সৌর কোষগুলো মেরামত করার পাশাপাশি তাদের শক্তি দিতে পারে।