২৬শে এপ্রিলের “নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন”-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ইঙ্গিত আছে। আফ্রিকা- হ্যাঁ উদ্ভ্রান্ত সেই আদিম যুগের মানুষের প্রথম আবাসের জায়গা। আফ্রিকাতেই ম্যালেরিয়া সবথেকে বেশী মৃত্যু ঘটায়। আর তাও শিশুদের। ২০২২ সালেই শুধু আফ্রিকায় ম্যালেরিয়ায় মারা গেছেন ৬,০৮,০০০ মানুষ, যার মধ্যে তিন-চতুর্থাংশই পাঁচ বছরের নীচের বয়সী শিশু। মশারী, নানাধরণের ভ্যাকসিন, মাসে মাসে ওষুধ খাওয়ানো প্রভৃতি নানা পদ্ধতিতে চেষ্টা চলছে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ কমানোর। কিন্তু আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় নি। তাই এই নতুন পদ্ধতি ঘিরে এত আশা। মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি হচ্ছে এমন অ্যান্টিবডী যা ঠিক নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত করে মিসাইলের মতো। ম্যালেরিয়ার জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার আগে কোষের গায়ে বসে থাকা একটি অ্যান্টিজেনে গিয়ে লাগে। মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ঠিক সেই অ্যান্টিজেনটিকে অকেজো করে, যাতে ম্যালেরিয়ার অ্যান্টিজেনে সংক্রামিত কোষ পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। “আমেরিকার ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ্” এর পিটার ক্রম্পটনের নেতৃত্বাধীন গবেষকরা আফ্রিকার মালীতে (এখানে ম্যালেরিয়া ভয়াবহ) জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে “এল ৭ এস এস” অ্যান্টিবডী বাচ্চাদের উপর প্রয়োগ করেন। এদের নিবিড় নজরে রেখে দেখা যায় ছমাস পর্যবেক্ষণের সময় যারা অ্যান্টিবডী পেয়েছিল তাদের মধ্যে মাত্র চল্লিশ শতাংশের ম্যালেরিয়া হয়েছে। যারা পায়নি তাদের মধ্যে ম্যালেরিয়া হবার হার ৮০%। যাদের অসুখ হয়েছিল তাদের তীব্রতাও অনেক কম। অর্থাৎ মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডীটি ম্যালেরিয়া সংক্রমণের হার কমাচ্ছে। অনেক পথ চলা বাকী, তবুও আশা নতুন পথের হদিশ মিলেছে।