ডুগং বিশ্বের একমাত্র তৃণভোজী সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী যারা খাদ্যের জন্য সামুদ্রিক ঘাসের উপর নির্ভর করে। এরা উপকূলীয় সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভারতে মাত্র ২৫০ টা ডুগং আছে বলে মনে করা হচ্ছে। ডুগং, স্তন্যপায়ী প্রাণিটিকে, International Union for Conservation of Nature (IUCN) দ্বারা বিপন্ন হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। তবে তাদের অবলুপ্তির পরিণতি যথেষ্ট খারাপ হতে পারে এবং তাদের উপর নির্ভরশীল বাস্তুতন্ত্র ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। ডুগংগুলো সামুদ্রিক ঘাস খায়, এবং এই প্রাণি ও সামুদ্রিক গাছ উভয়ের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার সম্পর্ক রয়েছে। ডুগং সামুদ্রিক ঘাস খায় বলে তা ছেঁটে ছোটো হয়ে যায়, যা আবার ঘাস পুনরুত্পাদন করতে এবং শৈবালের বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে৷ আর ডুগংও নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ এবং কম ফাইবারযুক্ত খাবার পছন্দ করে, তাই এই ঘাস খায়।
অন্যদিকে সামুদ্রিক ঘাস হল একটি সামুদ্রিক উদ্ভিদ যা অগভীর জলে জন্মায়, উপকূলরেখার জন্য এটা অত্যন্ত উপকারী, কারণ এটি অক্সিজেন উত্পাদন করে এবং উপকূলীয় জল পরিষ্কার করে এবং তাপ শক্তি শোষণ করে ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। গবেষণা থেকে জানা যায় সমুদ্রঘাস জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমিত করতে একটি প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে, ক্রান্তীয় রেইনফরেস্টের তুলনায় ৩৫ গুণ দ্রুত বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন গ্রহণ করতে পারে। তা সত্ত্বেও, মানুষের কার্যকলাপ এবং উষ্ণ সমুদ্রের তাপমাত্রার কারণে বিশ্বব্যাপী সমুদ্র ঘাসের তৃণভূমি প্রতি বছর প্রায় ৭% হারে হারিয়ে যাচ্ছে।
তামিলনাড়ু রাজ্য সরকার গত বছর ডুগংয়ের জন্য প্রথমবার দেশে সংরক্ষণ ঘোষণা করেছেন। মান্নার উপসাগরের পল্ক বে এলাকায় অবস্থিত, এই সংরক্ষণের লক্ষ্য যেমন এই সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীকে শিকার এবং ক্ষতিকারক মাছ ধরার অভ্যাস থেকে রক্ষা করা, তেমন এটা জলবায়ু পরিবর্তনের খারাপ প্রভাব থেকে উপকূলরেখাকে রক্ষা করতেও সাহায্য করতে পারে। এইজন্য তারা স্থানীয় মৎস্যজীবীদের সচেতন করছেন, ডুগং ধরা নিষিদ্ধ করেছেন কারণ একটা ডুগং তার মাংসের জন্য অনেক বেশি দামে বিক্রি হয়। কোনো ডুগং কেউ ধরলে তা আবার সমুদ্রে ফিরিয়ে দিচ্ছে, পরিবর্তে তারা সরকারের থেকে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে।