ক্ষতিকারক উদ্ভিদ প্রজাতি প্রাকৃতিক অঞ্চলের ২২% আক্রমণ করেছে এবং তা ভারতের সবুজ অঞ্চলের প্রায় ৬৬%-এ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে- সম্প্রতি প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় এমন কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। গবেষণাটি ভারতের ২০টি রাজ্যে ৩,৫৮,০০০ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত বাঘের আবাসস্থলের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। গবেষণায় বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে মধ্য ভারত এবং পশ্চিম ঘাটে আক্রমণাত্মক প্রজাতি অনেক বেশি পাওয়া গেছে, এবং এই স্থানে ভারতের ৩৬৮২ টি বাঘের প্রায় অর্ধেক বাস করে।
ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী নিনাদ অবিনাশ মুঙ্গি এবং ওমর কোরেশি এবং ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন ডিন ওয়াই ভি ঝালার করা সমীক্ষা অনুসারে ক্ষতিকারক প্রজাতির এই বিস্তার জীববৈচিত্র্য এবং মানুষকে হুমকির মুখে ফেলেছে, এবং ভারতের মতো উন্নয়নশীল গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশগুলোর অবস্থা আরও ঝুঁকিপূর্ণ। জার্নাল অফ অ্যাপ্লায়েড ইকোলজিতে প্রকাশিত পাঁচ বছর সময়কালের এই গবেষণায় ৩৫৮,৫৫০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে ১.৫৮ লাখ প্লট অধ্যয়ন করা হয়েছে এবং দেশে ১১টি সবচেয়ে প্রচলিত ক্ষতিকারক প্রজাতিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। নমুনাতে ৩১% সাভানা অঞ্চল, ৫১% শুষ্ক পর্ণমোচী অরণ্য, ৪০% আর্দ্র পর্ণমোচী অরণ্য, ২৯% মিশ্র চিরহরিৎ অরণ্য, ৪৪% চিরহরিৎ অরণ্য এবং ৩৩% আর্দ্র তৃণভূমি সাভানাকে ঘিরে করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে সাভানাতে ক্ষতিকারক প্রজাতির আক্রমণ সবচেয়ে বেশি প্রায় ৮৭%, তারপরে আর্দ্র তৃণভূমি এবং শুকনো পর্ণমোচী অরণ্য যেখানে আক্রমণ প্রতিটির ক্ষেত্রে প্রায় ৭২% অন্যদিকে চিরহরিৎ অরণ্যে তুলনামূলকভাবে কম বিস্তার লাভ করেছে প্রায় ৪২%। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে ১১টি ক্ষতিকারক উদ্ভিদের প্রজাতির মধ্যে ল্যান্টানা কামারা সবচেয়ে বেশি বিস্তার লাভ করেছে এবং প্রাকৃতিক আবাসস্থলের প্রায় ৫০% জুড়ে এই উদ্ভিদ পাওয়া গেছে। মিকানিয়া মিক্রানথা তুলনামূলকভাবে কম বিস্তৃত ছিল এবং এটি প্রধানত আর্দ্র তৃণভূমি এবং বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। পশুচারণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন ক্ষতিকারক প্রজাতির বিস্তারকে সহজতর করেছে।
ঝালা বলেন, দেশব্যাপী সমীক্ষার মাধ্যমে প্রথমবার এই ধরনের সমস্যার ব্যাপকতা নথিভুক্ত করা হয়েছে। অধ্যয়নটি ক্ষতিকারক প্রজাতি সবচেয়ে বেশি যে সব অঞ্চলে বিস্তার লাভ করতে পারে সেগুলোকে চিহ্নিত করে এবং তাদের সাথে মোকাবিলা করার জন্য নীতি তৈরি করতে সরকারকে সাহায়তা করতে পারে। পরিবেশ মন্ত্রক ইতিমধ্যে বাঘের আবাসস্থলে আক্রমণাত্মক প্রজাতির সমস্যা চিহ্নিত করেছে। মন্ত্রক বাঘের মূল্যায়ন প্রকল্পের সাথে এটিকে সংযুক্ত করে জাতীয় স্তরে ক্ষতিকারক উদ্ভিদ পর্যবেক্ষণ বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করেছে।