স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার আজ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞানীরা একটি নতুন স্টিকারের কথা বলছেন যা একদিন কৃত্রিম মেধা ব্যবহার করে তাদের গলার পেশির নড়াচড়া চিহ্নিত করতে পারবে এবং সেগুলো ভাষায় পরিণত করে ভয়েস ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আবার কথা বলতে সাহায্য করতে পারবে। নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশিত এই গবেষণায় গবেষকরা জানিয়েছেন, ছোটো আকারের এই প্যাচটি শুধুমাত্র পেশির নড়াচড়ার মাধ্যমে চালিত হয়। ত্বকের সাথে সংযুক্ত থাকার দরুন এই প্যাচটি স্বরযন্ত্রের পেশির নড়াচড়াকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তরিত করে, যা পরবর্তী ক্ষেত্রে একটি মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমের মাধ্যমে কথাবার্তায় পরিণত হয়। এই মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম হল কৃত্রিম মেধার এক রূপ। এরপর বক্তা তার বক্তব্য পেশ করতে সেটি বাজাতে পারবে – যদিও বর্তমানে প্রোটোটাইপটি শুধুমাত্র কিছু পূর্ব-রেকর্ড করা বাক্যাংশকে রিলে করে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জিয়ান চে বলেছেন এই অভিনব স্টিকারটি একজন ব্যক্তির ভোকাল কর্ডের কম্পন ছাড়াই কাজ করে, যার অর্থ হল এটি সেই সব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে যাদের ভোকাল কর্ড ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সমীক্ষা অনুসারে, প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ তাদের জীবদ্দশায় অন্তত একবার ভয়েস ডিসঅর্ডার বা গলার স্বরের ব্যাধিতে ভোগেন। গুরুতর স্বরের সমস্যার ক্ষেত্রে ইলেক্ট্রো ল্যারিংক্সের মতো কিছু যন্ত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকে কিন্তু এগুলো বেশ অসুবিধজনক এবং অস্বস্তিকরও বটে। জলরোধী এই প্যাচটি মোটামুটি একটি বড়ো মুদ্রার আকারের এবং এর ওজন মাত্র সাত গ্রাম। এর টেক্সচার অনেকটা রাবারের গ্লাভসের মতো। গবেষণায় যন্ত্রটি পরীক্ষা করার জন্য, কণ্ঠস্বর ঠিক আছে এমন আটজন স্বেচ্ছাসেবককে পাঁচটি বাক্য ফিসফিস করে বলতে বলা হয়েছিল। তারা দাঁড়ানো, হাঁটা এবং দৌড়ানোর সময় বাক্যাংশগুলো বলেছিল যাতে নিশ্চিত করা যায় যে চলাফেরা করার সময়ও প্যাচটি কাজ করে। গবেষণা অনুসারে, যন্ত্রটি ৯৫% ক্ষেত্রে সঠিকভাবে তা বলতে পেরেছিল। তবে কিছু শব্দ বলতে গলার পেশি নাড়াচাড়া একইভাবে হয় সেই সব ক্ষেত্রে এই স্টিকারের কাজ কঠিন হয়ে পরে। যদিও যন্ত্রটি নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন তবে চে-র মতে বেশ কিছু বছরের কাজ ও উন্নত অ্যালগরিদম প্যাচটিকে রোগীদের জন্য উপযোগী করে তুলবে।