মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটি, বেইজিং ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া ডেভিসের গবেষকরা জানিয়েছেন বায়ু দূষণের প্রভাবে পোকামাকড়ের খাদ্য এবং সঙ্গী খুঁজে পাওয়ার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। কলকারখানা, পরিবহন, দাবানল এবং অন্যান্য উত্স থেকে ভারি বা বিষাক্ত কণা যোগ হয়ে বাতাস দূষিত হয়, যার ফলে পোকার অ্যান্টেনা বা শুঁড়ে এর প্রভাব পড়ে। মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক মার্ক এলগার, নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটির সহ-লেখক, মানুষকে সতর্ক করেছেন যে এই দূষণ পোকামাকড়ের জনসংখ্যার জন্য যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেছেন, যে এইসব পদার্থের কণার সংস্পর্শ পোকামাকড় সহ জীবের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে এটা আগে জানা ছিল, কিন্তু তাদের গবেষণায় দেখা গেছে যে এর প্রভাবে খাদ্য এবং সঙ্গী খোঁজার জন্য পোকামাকড়ের গন্ধ সনাক্ত করার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা এটা হ্রাস করছে।
আমরা যে খাদ্যের ওপর নির্ভর করি, তার প্রায় সমস্ত ফসলের পরাগ সংযোগে পোকামাকড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তার সাথে তারা জৈব যৌগের উপাদান ভাঙা এবং সেই পুষ্টির পুনর্ব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
পোকামাকড়ের অ্যান্টেনায় ঘ্রাণযুক্ত রিসেপ্টর থাকে যা খাদ্যের উৎস, সম্ভাব্য সঙ্গী বা ডিম পাড়ার ভালো জায়গা থেকে নির্গত গন্ধের অণু সনাক্ত করে। যদি একটি পোকার অ্যান্টেনা বায়ুবাহিত দূষিত কণা দ্বারা আবৃত থাকে, তাহলে তার শারীরিক বাধা তৈরি হয় যা তাদের গন্ধ রিসেপ্টর এবং বায়ুবাহিত গন্ধের অণুগুলির মধ্যে যোগাযোগে বাধা দেয়।
গবেষকরা দেখেছেন গ্রামীণ এলাকায় বা দাবানলের থেকে যথেষ্ট দূরত্বে থাকলেও ক্রমাগত মৌমাছি, বোলতা, মথ, মাছি সহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের অ্যান্টেনাগুলো ধোঁয়া কণা দ্বারা দূষিত হয়।
পৃথিবীর প্রায় ৪০ শতাংশ স্থলভাগে বায়ু দূষণের ঘনত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রস্তাবিত বার্ষিক গড় থেকে বেশি। অধ্যাপক এলগার বলেছেন, যেহেতু দূষণের ফলে বিষাক্ত কণাগুলো বায়ুর মাধ্যমে হাজার হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ভেসে যেতে পারে ফলে এর মধ্যে অনেক দূরের অঞ্চল বা গ্রামীণ আবাসস্থলের বায়ুও দূষিত হয়ে পড়ছে।