বার্ধক্যকালীন সময়ে বসে না থেকে নিয়মিত শরীর চর্চা করলে চিন্তাভাবনা সচল থাকে – এমনটাই বলছে জেরোসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক নতুন গবেষণায়। গবেষণায় ৮৫ থেকে ৯৯ বছর বয়সী ১৮৪ জন ব্যক্তি চিহ্নিত করা হয়েছিল যাদের চিন্তনশক্তি ভালোভাবে কাজ করে। অংশগ্রহণকারী প্রতিটি ব্যক্তির নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস রয়েছে এবং তারা একটি নিউরোসাইকোলজিকাল পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গেছে যার মাধ্যমে তাদের বৌদ্ধিক স্তর মূল্যায়ন করা হয়েছিল। গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা বিভিন্নরকমের ব্যায়াম করে, যেমন সাঁতারকাটে বা সাইকেল চালায় অথবা ভারোত্তোলনের মতো শক্তির ব্যায়াম করে – তাদের মানসিক তত্পরতা, দ্রুত চিন্তাভাবনা করার শক্তি এবং চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করা বা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বেশি ছিল। মন্ট্রিল কগনিটিভ অ্যাসেসমেন্ট নামে একটি সুপরিচিত বৌদ্ধিক স্ক্রিনিং টুল ব্যবহার করে দেখা গেছে যে যারা কোনও শারীরিক ব্যায়ামে নিযুক্ত নন তাদের স্কোর শরীরচর্চায় নিযুক্ত ব্যক্তিদের তুলনায় কম। ব্যক্তিদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, ব্যায়ামের সময় প্রভৃতি বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করেও ফলাফলে যে পার্থক্য পাওয়া গেছে তা সামান্য হলেও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তাছাড়াও, যে দলটি উভয় ধরনের ব্যায়াম করেছে তারা নির্দিষ্ট বৌদ্ধিক ক্রিয়াকলাপে ভালো ফল করেছে।
সারা বিশ্বেই দেখা গেছে, মানুষের বয়স হলে তাদের মধ্যে বৌদ্ধিক দক্ষতা কমে যায় এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০৬০ সালের মধ্যে আলজাইমার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ১৪ মিলিয়নে পৌঁছবে বলে অনুমান করা হয়েছে, যা ২০২০ সালের হিসাবে মাত্র ৬ মিলিয়নের কিছু বেশি ছিল। এগুলো শুধুমাত্র সংখ্যা নয়; এটি বাস্তবে বয়স্ক ব্যক্তিদের চিন্তন ক্ষমতার প্রতিনিধিত্ব করে যা জীবন সায়হ্নে প্রবেশকারীদের জীবনের মানকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই গবেষণায় বলা হয়েছে যে রোগীদের শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য কিছু শরীরচর্চা কথা বিবেচনা করা প্রয়োজন যা তাদের চিন্তনশক্তি হ্রাস পাওয়া থেকে রোধ করবে এবং জীবনের মান উন্নীত করবে।