ছোটবেলায় খাবারের অ্যালার্জি না থাকলেও বড়ো হয়ে বা প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় কী খাবার থেকে অ্যালার্জি হতে পারে? উত্তর হল হ্যাঁ. কিন্তু এর কারণগুলো বেশ জটিল। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় প্রাক-প্রাথমিক স্কুলের শিশুদের খাবার থেকে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় চারগুণ বেশি এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটি থেকে নিরাময় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের খাবার থেকে অ্যালার্জির প্রকোপ সম্পর্কে সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল অ্যালার্জি কাউন্সিল রিপোর্ট করেছে যে প্রতি ৫০ জন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে একজনের খাবারে অ্যালার্জি রয়েছে। কিন্তু মার্কিন সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে প্রতি দশজনের মধ্যে একজন প্রাপ্তবয়স্কর মধ্যে অন্তত একটি খাবারে অ্যালার্জি রয়েছে।
খাবারে অ্যালার্জি হল ইমিউনোগ্লোবুলিন-ই (IgE) সংক্রান্ত শরীরে কিছু ইমিউন প্রতিক্রিয়া। ইমিউনোগ্লোবুলিন-ই হল এক ধরনের অ্যান্টিবডি যা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া ট্রিগার করে। এগুলো “আইজিই-মিডিয়াটেড ফুড অ্যালার্জি” নামে পরিচিত। অন্যদিকে এমন অনেক খাবার রয়েছে যেগুলোর প্রতি আমাদের শরীর অতি সংবেদনশীল। খাবার থেকে অ্যালার্জির বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা যেতে পারে যেমন আমবাত, ফোলাভাব, গিলতে অসুবিধা, বমি, গলা বা বুকে চাপ অনুভব করা, শ্বাস নিতে সমস্যা, বুকে ব্যথা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, মাথা ঘোরা, নিম্ন রক্তচাপ বা অ্যানাফিল্যাক্সিস। প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থাতেও বিভিন্ন খাবার থেকে অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে যেমন বাদাম, গোরুর দুধ, ডিম, চিংড়ি বা খোলসযুক্ত কিছু মাছ। সামগ্রিকভাবে, প্রাপ্তবয়স্কদের খাবারে অ্যালার্জির প্রকোপ বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০০৩ এবং ২০০৪ সালে প্রকাশিত পুরানো সমীক্ষার তুলনায়, চিনাবাদামের কারণে অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাব প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, আবার অন্যান্য বাদাম যেমন কাজু, আমণ্ড বা পেস্তার ক্ষেত্রে তা দ্বিগুণ হয়ে গেছে কিন্তু ঝিনুক, চিংড়ি বা খোলসযুক্ত মাছের ক্ষেত্রে অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাব একইরকম রয়েছে। দেখা যাচ্ছে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে খাবারের অ্যালার্জি যেমন বাড়ছে, শৈশব থেকে শুরু হওয়া খাবারের অ্যালার্জিগুলোও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে রয়ে যাচ্ছে। এর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে ভিটামিন ডি-এর কম মাত্রা, অতিরিক্ত “পরিষ্কার” থাকার কারণে প্রতিরোধ ব্যবস্থা কমজোরি হয়ে যাওয়া, এবং ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার।