আর মাত্র কয়েক মাসের অপেক্ষা। এ বছর শরতের সন্ধ্যায় আকাশে এক মহাজাগতিক আগন্তুককে দেখা যাবে। এই আগন্তুক আদতে একটি ধূমকেতু। আর এই ধূমকেতু দর্শন হতে পারে খালি চোখেই। ধূমকেতুটির নাম হল ‘তুকিনশান-অ্যাটলাস’। বিজ্ঞানীদের পূর্বাভাস, ধূমকেতুটি যে গতিতে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে, তাতে অক্টোবর মাসেই তাকে খালি চোখে দেখতে পারবে পৃথিবীবাসী। ধূমকেতুটি আবিষ্কার করে দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যাস্টারয়েড টেরেস্ট্রিয়াল-ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম (অ্যাটলাস)। অ্যাটলাস হল একটি যান্ত্রিক প্রারম্ভিক সতর্কতা ব্যবস্থা যা পৃথিবীর কাছাকাছি আসা গ্রহাণুকে কয়েক সপ্তাহ থেকে মাত্র কয়েক দিন আগে শনাক্ত করতে পারে।
২০২৩ সালে ধূমকেতুটি প্রথম নজরে পরে বলে এর আর এক নাম সি/২০২৩এ৩। প্রথমে এটিকে একটি গ্রহাণু বলে মনে করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। পরে চিনের তুকিনশান অবর্জাভেটরি নিশ্চিত করে যে এটি আসলে একটি আগত ধূমকেতু। ধূমকেতুটি যখন প্রথম দেখা গিয়েছিল, তখন এটি বৃহস্পতির কক্ষপথের বাইরে ছিল, সূর্য থেকে প্রায় ৬৮০ মিলিয়ন মাইল দূরে। কিন্তু এই বছরে সেপ্টেম্বর মাসে, তুকিনশান-অ্যাটলাস সূর্যের সবচেয়ে কাছে চলে আসবে, প্রায় ৩৬ মিলিয়ন মাইলের মধ্যে। আর তার ঠিক দু সপ্তাহ পরে, আনুমানিক ১২ই অক্টোবর, পৃথিবী থেকে ধূমকেতুর দূরত্ব থাকবে মাত্র ৪৪ মিলিয়ন মাইল। সেই সময়ই পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ থেকে তাকে দেখা যাবে। তবে দক্ষিণ গোলার্ধের বাসিন্দারা সূর্যাস্তের একটু পরই ধূমকেতুটি দেখতে পাবে। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে তার ঔজ্জ্বল্য কমতে শুরু করবে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সৌরমণ্ডলকে চার পাশ থেকে ঘিরে রেখেছে গোলকের আকারে বরফের এক মহাসাম্রাজ্য। বিজ্ঞানের পরিভাষায় তাকে বলে ওরট ক্লাউড। সেটি অগণিত ধূমকেতুর বাসা। সেই ওরট ক্লাউড থেকে সরাসরি বেরিয়েই এই মহাজাগতিক আগন্তুক ঢুকে পড়েছিল সৌরমণ্ডলে। আপাতত যতটুকু নজরে এসেছে, তাতে ধূমকেতুটির নিউক্লিয়াস বোঝা যাচ্ছে। তবে তার লেজের দিকটা আকারে পরিবর্তনশীল। বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, সূর্য, পৃথিবী এবং ধূমকেতুটির নিজস্ব জ্যামিতিক সম্পর্ক বদলে যাওয়াতেই এই আকারের পরিবর্তন।