শহরাঞ্চলে লো-ফ্রিকোয়েন্সি বা স্বল্প-কম্পাঙ্কের শব্দ আমাদের প্রায়শই বিরক্তির উদ্রেক করে যেমন- গাড়ি বা বিমান বা ট্রেনের শব্দ বা শহরের অন্যান্য কোলাহল। সেক্ষেত্রে পিং পং বল এই শব্দ রোধ করার ক্ষেত্রে কম খরচে একটি উপায় হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। নতুন এক গবেষণায় এমন কথাই উঠে এসেছে। এই ধরনের স্বল্প-কম্পাঙ্কের শব্দ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ, তবে এটি বন্ধ করাও কঠিন। শব্দগুলো আমাদের চারিদিক থেকেই আসে এবং উচ্চ-কম্পাঙ্কের শব্দের মতো দেয়াল বা অন্য কোনো কাঠামো দ্বারা অবরুদ্ধ হয় না। স্বল্প-কম্পাঙ্কের শব্দ প্রতিরোধ করতে, ফ্রান্সের লিলি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গ্রিসের এথেন্সের ন্যাশনাল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা হেলমহোল্টজ রেজোনেটর হিসেবে পিং পং বল ব্যবহার করেন আর এই রেজোনেটর এক বিশেষ আকারের পাত্র যা নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের শব্দ শোষণ করার জন্য তৈরি। জার্মান পদার্থবিদ হারমান ভন হেলমহোল্টজের নামানুসারে এর নাম দেওয়া হয় হেলমহোল্টজ রেজোনেটর যাতে একটি খালি চেম্বার ও একটি ছোটো ছিদ্র রয়েছে। গবেষকদের মতে এই পিং পং বল খুবই সুপরিচিত একটি বস্তু যা সারা বিশ্বে প্রচুর পরিমাণে উপস্থিত। পিংপং বল তাই কম খরচে এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য বস্তু হিসেবে ইনসুলেটরের বিকল্পে ব্যবহার করা যায়। নাম অনুসারেই, হেলমহোল্টজ রেজোনেটর অনুরণনের মাধ্যমে কাজ করে, শব্দ তরঙ্গ শোষণ করে। পাত্রটির আয়তন এবং ছিদ্রের আকার নির্ধারণ করে রেজোনেটর কোন কম্পাঙ্কের শব্দ শোষণ করতে পারবে। একসাথে একাধিক হেলমহোল্টজ রেজোনেটর ব্যবহার করে আরও বেশি শব্দ প্রতিরোধ করা যেতে পারে। হেলমহোল্টজ রেজোনেটর এর প্রাকৃতিক ফ্রিকোয়েন্সিতে শব্দ তরঙ্গ শোষণ করার অনন্য ক্ষমতা রয়েছে এবং একটি সরু পথের মাধ্যমে পরিবেশের সাথে সংযুক্ত করা যেতে পারে। গাণিতিক মডেলিং এবং প্রকৃত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গবেষকরা দেখিয়েছেন যে একাধিক হেলমহোল্টজ রেজোনেটর একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে রোধ করা শব্দের কম্পাঙ্ক নিয়ন্ত্রণ করতে হেরফের করা যেতে পারে। গবেষকরা বলেছেন যে নির্দিষ্ট শব্দ অবরুদ্ধ করার ক্ষেত্রে যদিও পিং পং বল নিয়ে খুব বেশি পরীক্ষা করা হয়নি, কিন্তু শব্দ দূষণ থেকে রক্ষা করার জন্য এই সর্বব্যাপী এবং সাশ্রয়ী মূল্যের বস্তু ব্যবহার করার সম্ভাবনা রয়েছে। গবেষণাটি জার্নাল অফ অ্যাপ্লাইড ফিজিক্সে প্রকাশিত হয়েছে।