আমাদের জীবন ক্রমশ তথ্যনির্ভর হয়ে উঠছে, তথ্য দ্বারা চালিত হচ্ছে। আমাদের ফোন আমাদের সময় এবং ইন্টারনেট ব্যবহার নিরীক্ষণ করে আবার অনলাইন মাধ্যমে পরিচালিত সমীক্ষা আমাদের মতামত এবং পছন্দগুলো শনাক্ত করে ফেলে৷ আমাদের কেন্দ্র করে যে তথ্য উঠে আসে তা বলে দিতে পারে আমরা কতটা ভালো ঘুমিয়েছি বা আমরা কী কিনতে চাই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সংখ্যা ধীরে ধীরে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে মানুষের সংখ্যাগত দক্ষতা পিছিয়ে পড়ছে। ছেলেমেয়েরা আজ দ্বাদশ শ্রেণির পরে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে গণিতের দিকে কম ঝুঁকছে। সাধারণ ব্যক্তিদের বড়ো তথ্য এবং সংখ্যা বুঝতে সাহায্য করার জন্য, আমরা প্রায়শই লেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপনা করে থাকি। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই পাই চার্টের ব্যবহার এড়িয়ে চলি।
পাই চার্ট হল একটি বৃত্তাকার চিত্র যা সংখ্যাগত শতাংশ বোঝায়। বৃত্তটি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত, প্রতিটি ভাগের আকার এটি যে বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করে তার সমানুপাতিক হয়। কিন্তু আমাদের কাছে দুটির বেশি বিভাগ হয়ে গেলে, পাই চার্টে শতাংশের উপস্থাপনা ভুল হয়ে যেতে পারে এবং পড়া কঠিন হয়ে যায়। যেমন আমরা যদি তিনটি স্থানের তথ্য তিনটি আলাদা আলাদা পাই চার্টে তুলনা করি সেক্ষেত্রে সাধারণ রেফারেন্স পয়েন্ট না থাকায় বড়ো বা ছোটোর তুলনায় ভুল হয়ে যায়। তথ্য উপস্থাপনার ক্ষেত্রে যদি অনেক বিভাগ থাকে তবে সে ক্ষেত্রেও পাই চার্টে উপস্থাপনার অসুবিধা রয়েছে কারণ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিভাগে স্পষ্ট লেবেলিং করা যায়না এবং ভিন্ন ভিন্ন রঙের ক্যালিডোস্কোপ ব্যাখ্যা করা কঠিন করে তোলে। পাই চার্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা থাকা সত্ত্বেও, এগুলো সর্বত্র ব্যবহৃত হয়- জার্নালে, নিবন্ধে, পিএইচডি থিসিস, রাজনৈতিক ভোটে, বই, সংবাদপত্র এবং সরকারী প্রতিবেদনে।
তাহলে পাই চার্টের ভালো বিকল্প কি? একটি সহজ সমাধান রয়েছে যা কার্যকরভাবে একটি ছোটো জায়গায় অনেক বড়ো তথ্য উপস্থাপন করতে পারে- আর এটি হল স্তম্ভলেখ বা বার চার্ট। স্তম্ভলেখ উপস্থাপনায় তথ্য দেখা অনেক সহজ। সামগ্রিকভাবে, পাই চার্ট অল্প ব্যবহার করাই ভালো। লেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপনার মূল লক্ষ্য হল তথ্য সহজে এবং দ্রুত যাতে বোঝা যায় তার চেষ্টা করা। কোনো তথ্যের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে হলে সম্ভবত পাইচার্ট ব্যবহার করা যেতেই পারে।