নতুন গবেষণার মাপজোক বলছে, প্রোটন অনেক বেশি প্রসারণশীল। বিজ্ঞানীদের আগেকার ধারনা এতটা ছিল না। প্রোটন কণার গঠন সম্পর্কে কি আমাদের প্রাথমিক জানাবোঝার ক্ষেত্রটা একেবারেই বদলে ফেলা দরকার? নাকি আগামী সময়ের কোনও পরীক্ষায় ভেঙে যাবে এই নতুন ধারণাটা?
একটা প্রোটন কণার মধ্যে তিনটে কোয়ার্ক নামের অবকণিকা থাকে, যারা আবার গ্লুওন নামের অতিক্ষুদ্র কণা দ্বারা একে অপরের সাথে আটকে আছে। তড়িৎ বা চৌম্বকক্ষেত্রের উপস্থিতিতে প্রোটনের ভেতরকার এই গঠনগত অবকণিকা তাদের তড়িৎ আধান বা চার্জ অনুযায়ী নড়াচড়া করতে থাকে। ফলে সামগ্রিকভাবে একটা প্রোটন কণার গঠন পাল্টে যায়, বা সেটা প্রসারিত হয়।
পেনসিলভানিয়ার টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকোলাস স্পারভেরিস ও তাঁর সহকর্মীরা সম্প্রতি এক গবেষণায় প্রোটনের প্রসারণশীলতা পরিমাপ করেছেন। অনেক বেশি সূক্ষ্ম এই পরীক্ষায় দেখা গেছে, তড়িৎক্ষেত্র বা চৌম্বকক্ষেত্র প্রোটনের প্রসারিত হওয়ার প্রবণতা দুটো জায়গাতেই বেশি। কিন্তু ঠিক কেমন ছিল পরীক্ষাটা?
কম শক্তিসম্পন্ন ইলেকট্রনের রশ্মিকে ফায়ার করা হয়েছিল তরল হাইড্রোজেনের দিকে। হাইড্রোজেনের মধ্যে থাকা একেকটা প্রোটন কণাকে ভেদ করে যখন ইলেকট্রন কণা এগিয়ে যাচ্ছে, একটা করে ফোটন কণার জন্ম হচ্ছে। এটা আদপে তখন একটা তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্র, যেখানে আরও বেশি বিকৃত হচ্ছে প্রোটন কণা। তারপর প্রোফেসর স্পারভেরিস ও তাঁর গবেষক দল হিসেব করে দেখেছেন একেকটা ফোটনের উপস্থিতিতে কতটা প্রসারিত হতে পারে প্রোটন কণা।
নেচার পত্রিকায় এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হতে চাঞ্চল্য তৈরি হচ্ছে পদার্থবিদ্যার জগতে। নেদারল্যান্ডের অ্যামস্টারডামে ভ্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হুয়ান রোসো বলছেন, প্রোটনের এই নিয়মবিরুদ্ধ আচরণ থেকে কী আদৌ বোঝা যাচ্ছে? এটা থেকে কি প্রোটনের গঠন সম্পর্কে নতুন কোনও তত্ত্ব আসবে?