দ্য ল্যানসেট সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত এক গবেষণাতে বলা হয়েছে ২৯টি দেশের ৫০ শতাংশ ব্যক্তি ৭৫ বছর বয়সের মধ্যে কোনো না কোনো মানসিক ব্যাধির শিকার। দ্য ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ড এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকদের নেতৃত্বে একটি বিশ্বব্যাপী গবেষণায় ২০০১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ২৯ টি দেশ জুড়ে ১৫০০০০- এরও বেশি প্রাপ্তবয়স্কদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাধি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রতি দুইজনের মধ্যে একজন তাদের জীবদ্দশায় মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাধিতে ভুগছেন।
UQ এর কুইন্সল্যান্ড ব্রেইন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক জন ম্যাকগ্রা, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক রোনাল্ড কেসলার এবং অন্যান্য ২৭টি দেশে তাদের সহকর্মীরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়ার্ল্ড মেন্টাল হেলথ সার্ভে ইনিশিয়েটিভ -এর উদ্যোগে ১৫০০০০ জনের বেশি প্রাপ্তবয়স্কের সাক্ষাৎকার নিয়ে তার তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন, যা এখনো অবধি সাক্ষাৎকারের সবচেয়ে বড়ো সমীক্ষা।
প্রফেসর ম্যাকগ্রা বলেন, সবচেয়ে সাধারণ ব্যাধি হল মেজর ডিপ্রেশন বা অত্যন্ত উদ্বেগ, এছাড়া তারা কিছু মানসিক রোগের ঝুঁকিও খুঁজে পেয়েছেন যা মহিলা ও পুরুষদের ক্ষেত্রে ভিন্ন। মহিলারা যে সমস্ত সাধারণ মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধিতে ভুগছেন তা হল, বিষণ্ণতা , নির্দিষ্ট ফোবিয়া বা এমন কিছু নিয়ে উদ্বেগ যা দৈনন্দিন জীবনে অসুবিধা সৃষ্টি করে এবং পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস (PTSD)। পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা যায় অ্যালকোহল আসক্তি, বিষণ্ণতা এবং কোনো কিছুতে ভয় পাওয়া।
গবেষণায় দেখা গেছে মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাধিগুলি সাধারণত শৈশব, কৈশোর বা যৌবনে অঙ্কুরিত হয়। মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাধির সূত্রপাত সর্বনিম্ন ১৫ বছর বয়সে দেখা গেছে। মোটামুটিভাবে পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৯ বছর এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ২০ বছরে এই ব্যাধির সূত্রপাত হয়েছে বলে অধ্যাপক ম্যাকগ্রা জানিয়েছেন।
অধ্যাপক কেসলার বলেছেন, কেন এই ব্যাধিগুলি বিকশিত হয় তা বোঝার জন্য মৌলিক স্নায়ুবিজ্ঞানে কাজ হওয়া দরকার। এবং তরুণদের ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় আরো বিনিয়োগ প্রয়োজন। জনস্বাস্থ্য পরিষেবা এমনভাবে পরিকল্পনা করতে হবে তা যেন সাধারণ মানসিক ব্যাধিগুলি অবিলম্বে সনাক্ত করতে পারে এবং রোগীদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উপযুক্ত সাহায্য দিতে পারে। এর জন্য সমস্ত ধরনের সংস্থান বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন।