শীতের শুরুর আগে প্রতি বছর বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহরগুলোর মধ্যে নতুন দিল্লি তালিকার শুরুর দিকেই স্থান করে নেয়। এই সময় নিস্তরঙ্গ শান্ত বাতাস এবং নিম্ন তাপমাত্রা- যানবাহন, কলকারখানা বা কোনো ধরনের নির্মাণ ক্ষেত্র থেকে উদ্ভূত ধূলিকণা এবং নিকটবর্তী ক্ষেতে ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো থেকে ছাইয়ের কণা আটকে রাখে। দিল্লিতে বায়ুর মান খারাপ হওয়াতে পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রাই বলেছেন যে সরকার বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ক্লাউড সিডিংয়ের মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টি আনার চেষ্টা করবে। দিল্লিতে বায়ুর গুণমান সূচক (AQI) ৪৫৭ যা অত্যন্ত ‘গুরুতর’ স্তরে পৌঁছে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কৃত্রিম বৃষ্টির জন্য ক্লাউড সিডিং কতটা ফলপ্রদ তা বোঝার জন্য রাই আইআইটি কানপুরের বিজ্ঞানীদের টিমের সাথে একটি বৈঠক করেন। বিজ্ঞানীদের মতে, বায়ুমণ্ডলে মেঘ বা আর্দ্রতা থাকলেই ক্লাউড সিডিংয়ের চেষ্টা করা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা এই ধরনের পরিস্থিতি ২০ থেকে ২১ শে নভেম্বরের কাছাকাছি সৃষ্ট হতে পারে।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) কানপুর থেকে “কৃত্রিম বৃষ্টি”-র এই ধারণাটি প্রস্তাব করা হয়েছিল এবং এই প্রকল্পটিতে ২০১৮ সাল থেকে কাজ করা হচ্ছে। এই বছরের জুলাই মাসে, বিজ্ঞানীরা ক্লাউড সিডিংয়ের মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টি তৈরির জন্য সফলভাবে পরীক্ষা চালান। মেঘের মধ্যে কিছু রাসায়নিক পদার্থের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে বৃষ্টিপাত বাড়ানোর বা আবহাওয়া পরিবর্তনের একটি মনুষ্যসৃষ্ট কৌশল হল ক্লাউড সিডিং। বিমান এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার করে সিলভার আয়োডাইড, পটাসিয়াম আয়োডাইড, বা ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডের মতো সিডিং এজেন্ট মেঘের উপর ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং এই সিডিং এজেন্ট ঘনীভূত মেঘের মধ্যে ক্ষুদ্র বরফের নিউক্লিয়াস প্রবর্তন করে এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে বৃষ্টি বা তুষারপাত আনে। এই নিউক্লিয়াস স্নোফ্লেক্স গঠনের জন্য একটি ভিত্তি প্রদান করে। ক্লাউড সিডিং সঞ্চালিত হওয়ার পরে, নবঘনীভূত তুষারকণা আকারে দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং মেঘ থেকে পৃথিবীর পৃষ্ঠে বৃষ্টি বা তুষার রূপে ফিরে আসে। গবেষকরা কৌশলটি চালানোর জন্য ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) সহ সরকারী কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় অনুমতিও পেয়েছেন।