রাতের আকাশে চাঁদের রূপ কবি, সাহিত্যক, সাধারণ মানুষকে মুগ্ধ করে। পূর্ণিমা রাতে চাঁদের রূপ কত কবিতা, গল্পে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু দিনের আকাশেও মাঝে মাঝে আমরা চাঁদের দেখা পাই। কীভাবে? তবে দিনের বেলা চাঁদ সবসময় দেখা যায় না। তার কারণ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল আর চাঁদের নিজের কক্ষপথে ভ্রমণ। যদি পৃথিবীতে বায়ুমণ্ডল অনুপস্থিত থাকত তাহলে পৃথিবী থেকে চাঁদকে সব সময় দেখা যেত। চাঁদের যে পর্যায়ে চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে দিয়ে যায়, যেমন অমাবস্যার সময় তখন চাঁদের আলোকিত দিক আমাদের থেকে দূরে থাকে এবং চাঁদের অন্ধকার দিক পৃথিবীর দিকে মুখ করে থাকে, ফলে আমরা রাতের আকাশে চাঁদ দেখতে পাইনা, দিনের আকাশেও দেখতে পাইনা।
আমাদের বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেন গ্যাস ছোটো তরঙ্গদৈর্ঘ্যের নীল এবং বেগুনি আলো বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে দেয়। এই বিক্ষিপ্তকরণে বায়ুমণ্ডলে আলো শোষিত হয় আবার ভিন্ন দিকে পুনরায় নির্গত হয়, তার ফলে পৃথিবী থেকে আকাশ নীল দেখায়। পেনসিলভানিয়ার ভিলানোভা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং জ্যোতির্পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক এডওয়ার্ড গুইনান বলেছেন দিনের বেলায় দৃশ্যমান হওয়ার জন্য, চাঁদকে সূর্যের বিক্ষিপ্ত আলোকে অতিক্রম করতে হবে। অমাবস্যার দু তিন দিন পরে সূর্যের বিক্ষিপ্ত আলোকে চাঁদ অতিক্রম করতে পারেনা তাই একে আকাশে দেখা যায়না। তবে পৃথিবীর সাথে চাঁদের আপেক্ষিক নৈকট্যর জন্য এর থেকে যে আলো প্রতিফলিত হয় তা বহু দূরবর্তী তারা বা অন্যান্য গ্রহের নির্গত বা প্রতিফলিত আলোর তুলনায় বেশি উজ্জ্বল। পৃথিবীর কাছাকাছি থাকা চাঁদের পৃষ্ঠের প্রতিফলন বেশি হওয়ার জন্য একে দিনের বেলায় দেখা যায়। দিনে চাঁদের দৃশ্যমানতা চাঁদের পর্যায়, আকাশ কতটা পরিষ্কার, ঋতুভেদে পরিবর্তিত হয়। সারা বছরের মধ্যে মাসে গড়ে ২৫ দিন সকালে আকাশে চাঁদ দেখা যায়। তবে পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে রাতের আকাশের অপেক্ষায় থাকতে হবে, ওইদিন সকালে কিন্তু চাঁদ দেখা দেবেনা।