কানের মধ্যে শঙ্খের আওয়াজ শুনছেন? কিছুতেই তা বন্ধ হচ্ছে না? এমন সমস্যা অনেকেরই হয়। শঙ্খ না হলেও কখনও কানের মধ্যে একটানা ঘণ্টা বাজে, কখনও বা সাইকেলের বেল। এ সব লক্ষণ নতুন নয়। অনেকে মনে করেন, কানে জল ঢুকে বা ঠান্ডা লেগে এই ধরনের আওয়াজ হতে পারে। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, সারাক্ষণ কানে এই ধরনের আওয়াজ শুনতে পেলেও আসলে কিন্তু কোনও আওয়াজ তৈরিই হয় না। চিকিৎসাশাস্ত্রে এই রোগের নাম ‘টিন্নিটাস’। এটি একটি সাধারণ সমস্যা যা বিশ্বব্যাপী প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজনের হতে পারে। মাস আই অ্যান্ড ইয়ার-এর গবেষকরা একটি নতুন সমীক্ষায় প্রকাশ করে যে যারা টিন্নিটাস রোগে আক্রান্ত তারা অডিটরি নার্ভের ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং এটি প্রচলিত শ্রবণ পরীক্ষা দ্বারা চিহ্নিত করা হয় না। গবেষণাটি সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে৷ শ্রবণশক্তি হারানো অনেক ব্যক্তি তাদের কানে ঝিঁ ঝিঁ, গুনগুন, রিন রিন শব্দ এমনকি জোরে আওয়াজও শুনতে পায়। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী ধারণা যে এই উপসর্গগুলো, যা টিন্নিটাস নামে পরিচিত, মস্তিষ্কের গঠনগত ও কাজের পরিবর্তনের ফলে উদ্ভূত হয়। অর্থাৎ, মস্তিষ্ক তার ক্রিয়াকলাপ বাড়িয়ে শ্রবণশক্তি হ্রাসের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করে, যার ফলে ওই ধরনের আওয়াজ উপলব্ধি হয়। ২০০৯ সালে গবেষকরা কক্লিয়ার সিনাপটোপ্যাথির মাধ্যমে আবিষ্কার করেন যে রোগীদের শ্রবণ পরীক্ষার ফলাফল ঠিক হওয়া সত্ত্বেও তাদের অডিটরি নার্ভের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হতে পারে। এই পরিপ্রেক্ষিতে গবেষকরা নির্ধারণ করতে চেয়েছিল যে এই ধরনের অলক্ষে হওয়া ক্ষতির সঙ্গে টিন্নিটাসের লক্ষণগুলোর কোনো যোগসূত্র আছে কিনা। তাদের অডিটরি নার্ভ এবং ব্রেইনস্টেমের প্রতিক্রিয়া পরিমাপ করে, গবেষকরা দেখতে পান যে দীর্ঘস্থায়ী টিন্নিটাস শুধুমাত্র অডিটরি নার্ভের ক্ষতি করে তা নয় রোগীর মস্তিষ্কেও হাইপারঅ্যাকটিভিটি দেখতে পাওয়া যায়।