সালমোনেল্লা মানুষ ও প্রাণীর অন্ত্রে বসবাসকারী এক ব্যাকটেরিয়া, এদের উপস্থিতিতে খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়, প্রাণঘাতী ডায়রিয়া, টাইফয়েড হতে পারে। গবেষকরা সালমোনেল্লার টাইফয়েডাল সেরোটাইপ, সালমোনেলা এন্টারিকা টাইফি নিয়ে গবেষণা করেছেন। এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের অন্ত্রে থাকে, অন্ত্র থেকে রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়লে টাইফয়েড জ্বর হয়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে খাবার বানানো এবং খাদ্য ঠিকমতো সংরক্ষণ করলে মানুষ সালমোনেল্লাজনিত বিষক্রিয়া এড়াতে পারে। টাইফয়েড জ্বর বিশ্বের অনেক অংশে বেশ বড়ো জনস্বাস্থ্য সমস্যা, যেখানে মানুষের কাছে বিশুদ্ধ জল, শৌচালয়, টাইফয়েড ভ্যাকসিন পাওয়া যায় না। এটি দূষিত খাবার এবং জলের মাধ্যমে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং শিশুদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
২০১৬ সালে, ব্যাপকভাবে পাকিস্তান জুড়ে ওষুধ-প্রতিরোধী টাইফয়েডের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে এবং আট বছর পরে, সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে এটা নিয়ন্ত্রণ না করলে আঞ্চলিক বা বিশ্বজুড়ে এই রোগের প্রাদুর্ভাব হতে পারে। পাকিস্তান তথা এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান দেশ জুড়ে অপুষ্টি দেখা যায়। ৬৪ টা দেশের ২০২৩ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রায় অর্ধেকের খাদ্যতালিকায় কোনো ফল বা সবজি থাকে না।
টমেটো পৃথিবীর সব দেশেই পাওয়া যায়, এটা স্যালাড হিসেবে বা রান্নায় খাওয়ার বেশ চল রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিনে পূর্ন টমেটোর মধ্যে এমন কিছু উপাদান পাওয়া গেছে যা ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে পারে। ল্যাব কালচারে দেখা গেছে, তাজা টমেটোর শাঁস, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সালমোনেল্লা টাইফি-কে মেরে ফেলছে। গবেষকরা টমেটোর জিনোম বিশ্লেষণ করে দুটো অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পেপটাইড পাওয়া গেছে, যেগুলো শুধুমাত্র যে সালমোনেল্লা টাইফিকে মেরে ফেলছে তা নয়, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ( টাইফয়েডের প্রধান অ্যান্টিবায়োটিক) ওষুধ প্রতিরোধী স্ট্রেনকেও ধ্বংস করে দিচ্ছে।
গবেষণার ফলাফল কখনোই প্রচুর পরিমাণে টমেটো রস খেতে উৎসাহ দিচ্ছে না, যে এটা ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। বরং, এই গবেষণা জনস্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রেখে মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তাদের ক্ষমতা অনুসারে সুষম খাদ্য খেতে উৎসাহিত করছে যেখানে শাকসবজি, ফলের সাথে টমেটো অন্তর্ভুক্ত থাকবে।