নুন আনতে পান্তা ফুরোয় – পৃথিবীর অবস্থাকে একটা প্রবাদেই ফুটিয়ে তোলা যায়। বিকল্প শক্তির সন্ধান করতে গিয়ে টান পড়তে পারে অন্য কোনও অপরিহার্য উপাদানে। এখুনি সেই অবস্থা তৈরি হয়নি বটে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার গ্রিন হাইড্রোজেন প্রোজেক্টের জন্যে জলের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে।
সাধারণত সৌর ব বায়ুশক্তি ব্যবহার করেই জ্বালানী হাইড্রোজেন উৎপাদন করা হয়। আশা আছে, কয়লা বা পেট্রোলিয়ামের মতো জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার কমিয়ে সভ্যতা অচিরেই অভ্যস্ত হবে হাইড্রোজেনে। কিন্তু উচ্চমানের জলের প্রয়োজন হয় তরল হাইড্রোজেন তৈরিতে। কিন্তু জলের তো ঐ একটাই কাজ নয়। চাষবাস, শিল্পকারখানা, শহর বা কৌম – কোথায় প্রয়োজন নেই জলের! জলবায়ু পরিবর্তন আর জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে চাপ ক্রমশ বাড়বে জলের জোগানে।
১০ মেগাজুল শক্তি উৎপাদনে যতটা হাইড্রোজেন লাগবে, সেটার জন্যে গড়ে এক লিটার জলের প্রয়োজন। একটা ৫০ টনের ট্রাককে ১৫ মিটার চালাতে গেলে ঐটুকু শক্তি যথেষ্ট। পূর্ববর্তী অস্ট্রেলিয়া সরকার হিসেব করেছিল হাইড্রোজেন শিল্পে ঠিক কতখানি জলের প্রয়োজন হতে পারে। ২০৫০ নাগাদ ৫০ বিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার খরচ হবে ঐ খাতে। মানে, ২২৫ বিলিয়ন লিটার জল! পার্থ শহরের বাসিন্দারা একটা গোটা বছরে যতখানি জল ব্যবহার করেন।
ও দেশের বিজ্ঞানমন্ত্রক স্পষ্টই জনিয়ে দিল সযত্ন পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে। দেশের মানুষের মতামত গ্রহণ করাটাও বাঞ্ছনীয়। কোথা থেকে জলের জোগান হবে, কীভাবেই বা সেটা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বণ্টন করা হবে সবকিছুই স্থিরভাবে নিশ্চিত করা দরকার।