কবরস্থান বিলীন হয়েছে সমুদ্রগর্ভে। ফিজি দ্বীপের টোগোরু শহরের কথা। ভয়ে জুজু হয়ে আছেন পুরনো বাসিন্দা লাভেনিয়া ম্যাকগুন। ওনার বাড়িও যেকোনো দিন তলিয়ে যেতে পারে আগ্রাসী সমুদ্রের অতলে। বাতিল গাড়ির পুরাতন টায়ার জড়ো করছেন উনি। সমুদ্রের গর্জন আর ওনার ছোট বাড়ির মধ্যে ঐ টায়ারগুলোই এখন নিরাপত্তা বলয়। আমাদের কাছে বোকামি বলে মনে হলেও লাভেনিয়ার কাছে ওটাই শেষ রক্ষাকবচ।
সংবাদসংস্থা এপিএফ-কে লাভেনিয়া ম্যাকগুন বলছেন, বিপদ আসবেই, কেউই আটকাতে পারবে না। সত্তর বছরের ঐ বৃদ্ধা নিশ্চিত যে তাকে এই বয়সে আবার বাড়ি বদলাতে হবেই। তিনি বিড়বিড় করেই চলেছেন, সমুদ্রকে কেই বা কবে রুখতে পেরেছে?
ফিজি দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত সবচেয়ে বড়ো দ্বীপ ভিটি লেভু। এরই দক্ষিণ উপকূল জুড়ে একটা ছোট শহর বলা চলে এই টোগোরুকে। প্রশান্ত মহাসাগরের তটরেখা জুড়ে এমন অজস্র গ্রাম রয়েছে, আছে গ্রামের চেয়ে বড়ো কিছু জনপদ। সব জায়গাতেই জলবায়ু পরিবর্তনের করাল বাস্তবতা কালো ছায়া ফেলে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
লাভেনিয়া ম্যাকগুন নয় নয় করে ষাট বছর কাটিয়েছেন এখানে। স্থানীয় লোকজন তাকে ‘বিগ নানা’ বলে ডাকেন। একেবারে সাধারণ একটা কাঠের বাড়িতে বিদ্যুৎ আর জলের সরবরাহ ছাড়াই তিনি এতদিন কাটিয়ে দিলেন। আমাদের একটা ক্ষেত ছিল ঐখানে, সমুদ্রের দিকে আঙুল তুলে তিনি পুরোটাই বুঝিয়ে দিলেন। গত ২০-৩০ বছরে কম করে ৫৫ মিটার এগিয়ে এসেছে সমুদ্রের জল।
২০০ জন মানুষের সমাধি ছিল টোগোরুর ঐ কবরস্থানে। গোটাটাই সলিলগর্ভে। লাভেনিয়া এখানেই মরতে চান কিন্তু সেটা কতদূর সম্ভব উত্তরটা দেবে সমুদ্রই।