গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলে যাওয়ার জন্য সমুদ্র উপকূলের নানা অঞ্চল নিমজ্জিত হওয়ার ঝুঁকির মুখে। কিন্তু গ্রীনল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডে একদম অন্য চিত্র দেখা যাচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের তুলনায় ভূমি দ্রুত উচ্চ হচ্ছে। জিয়োফিসিক্যাল রিসার্চ লেটারে প্রকাশিত ডিটিইউ স্পেস-এর নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৩ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বিগত ১০ বছরে গ্রীনল্যান্ডের বেডরকের উচ্চতা ২০ সেমি পর্যন্ত উঠেছে, অর্থাৎ প্রতি শতাব্দীতে ২ মিটারের সমান জমি উঁচু হচ্ছে। এই উত্থান আগামী বছরগুলিতেও ঘটবে, আংশিকভাবে উপরের বরফের গলবে, নীচের মাটি চাপমুক্ত হবে, ফলে মাটির উচ্চতা বাড়বে। এতে গ্রিনল্যান্ডের মানচিত্রও পালটাচ্ছে কারণ সমুদ্র থেকে নতুন ভূমি উত্থিত হচ্ছে, যা সময়ের সাথে সাথে নতুন ছোটো ছোটো দ্বীপ এবং পাথুরে শিলা তৈরি করছে। গ্রিনল্যান্ডে স্থানীয় পরিবর্তন বেশ দ্রুত ঘটছে, যাতে গ্রীনল্যান্ডের জীবন প্রভাবিত হচ্ছে৷
এই গবেষণা গ্রীনল্যান্ডের উপকূলে অবস্থিত ৬১টি পরিমাপ কেন্দ্রের একটি নেটওয়ার্ক, GNET থেকে পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। GNET হল একটি মৌলিক জিওডেটিক অবকাঠামো, যা বরফ গলা এবং ভূমি উত্থান পরিমাপের ডেটা প্রদান করে। ডিটিইউ স্পেস-এর গবেষকরা, এর সাহায্যে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হন। জিএনএসএস প্রযুক্তি, যেমন জিপিএস সিস্টেম, দীর্ঘ সময় যাবত, নির্ভুলতার সাথে সময়ের সাথে সাথে বেডরকের গতিবিধি কীভাবে মিলিমিটার পরিমাণ বাড়ে তা সনাক্ত করতে পারে। গ্রিনল্যান্ডের উচ্চতা ডেনমার্কের মতোই বাড়ছে। শেষ বরফ যুগে একটি পুরু বরফের পাত দিয়ে এই অঞ্চলের স্থলভাগ চাপা পড়েছিল। বরফ যুগ প্রায় ১২০০০ বছর আগে শেষ হলেও , বরফ থেকে চাপ মুক্তি ঘটার জন্য ভূমি উচ্চ হচ্ছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে বরফের স্তর গলে গত দুই দশকে গ্রিনল্যান্ডের উপকূলে অনেক দ্রুত অতিরিক্ত স্থানীয় ভূমি উত্থিত হয়েছে। গ্রিনল্যান্ডে ভূমি উত্থানকে শুধুমাত্র বরফ যুগের পরবর্তী প্রাকৃতিক বিকাশ হিসেবে ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না। গ্রিনল্যান্ডের উচ্চতা আরও বেশি হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডিটিইউ স্পেস অধ্যাপক জানিয়েছেন, এই উত্থানের পেছনে কারণ হল জলবায়ু পরিবর্তন, তারা আরও জানিয়েছেন GNET থেকে ডেটার সাহায্যে, তারা বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ভূমি উত্থানের অংশটিকে আলাদাভাবে বুঝতে পারবেন।